মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০১৪

অপেক্ষা: সৌন্দর্যের রাজ্য

খুব যে ঘুরেছি এক জীবনে তা নয়। তবে স্বপ্ন দেখতে বাধা কোথায়? কখনো হাতে টাকা হলে এবং সামর্থ্য থাকলে কোথায় কোথায় যাবো, অনেক ভেবেছি। এ ভাবনা যেন শেষ হবার নয়! হিমালয়ের বরফের রাজ্য থেকে ইউরোপের অপরূপ মধ্যযুগীয় স্থাপত্য ঘুরে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন বা আমাজনের গভীর অরণ্য-কোন কিছুই স্বপ্ন থেকে বাদ পড়ে না। এমন কিছু জায়গার কথাই আসবে এ পোস্টে, যেখানে একবার অন্তত যেতে চাই।
গ্রেট ব্যারিয়ার রীফ:

এক যে ছিল কোরাল। সেই প্রাণী, তার সমস্ত বংশধর মিলে ছয় লাখ বছর ধরে বুনে চললো এক বিশাল স্থাপনা। তারা হয়তো কোনদিন দেখলো না, কী অপরূপ সৃষ্টি গড়েছে,কিন্তু, আমার মতো মানুষেরা এর সৌন্দর্যে ছুটে যেতে চায় পৃথিবীর দূর প্রান্ত থেকে।
২৬০০ কি.মি. এই রীফের উপর নির্ভর করে বাঁচে ১০০০০ প্রজাতির জীব।
একটা প্রাণী ও তার সমস্ত বংশধরেরা লাখ বছর ধরে গড়ে চললো এই রীফ, আমি এই মহান সৃষ্টি না দেখে থাকবো, ভাবতে পারি না।
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন:

পাথুরে প্রাচীরে শো শো করে বয়ে চলা বাতাস আর বহু নিচে বয়ে চলা কলোরাডো নদী যেন মনে করিয়ে দেবে পৃথিবীটা কত্ত পুরনো। ১৭ মিলিয়ন বছর ধরে বয়ে চলা নদী পৃথিবীর বুক চিরে বসে গেছে মাইল-খানেক গভীরে।
গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের কোটি বছর পুরনো নদী, বয়ে চলা বাতাস আর নিস্তব্ধতা যেন একাকীত্বকে করে তুলতে পারে অনেক বেশি আপন।
ভেনিস:


১১৮ টা ছোট্ট দ্বীপের মাঝে দিয়ে বয়ে চলা অসংখ্য খাল আর দ্বীপগুলোকে সংযোগ করা অসংখ্য ব্রিজ: একটাই অসাধারণ শহর, ভেনিস। আমি কল্পনায় দেখতে পাই, একটা নৌকায় করে শহরের খালগুলোতে ঘুরে বেড়ানো, গভীর রাতে ঘরের পেছনে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকা, স্রোতধারায় ভেসে যাওয়া সমগ্র ভাবনা।
বাড়তে থাকা জলরাশি শহরটাকে ডুবিয়ে দেয়ার আগেই যেতে চাই ভেনিস-এ।
মাচু পিচু:

প্রায় আড়াই হাজার মিটার পর্বতের উপরে অবস্থিত এক অপূর্ব শহর, চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য, বিস্ময়কর স্থাপনা, কৃষিকাজের মানানসই ব্যবস্থা-প্রতিটি জিনিসে যেন ইনকা সভ্যতার বুদ্ধিমত্তার প্রগাঢ় ছাপ। ছয়শ বছর আগে এমন উঁচু স্থানে এমন অসাধারণ স্থাপনা যারা নির্মাণ করেছেন, তাদের সভ্যতা হিংসা করার মতো এগিয়ে ছিল বাকী পৃথিবী থেকে।
চারদিকে ঘুরতে থাকা ধোঁয়াটে কুয়াশার মাঝে হারিয়ে যেতে চাই হারানো সভ্যতার অপরূপ শহরের অলিগলিতে।
কাশ্মীর:


কাশ্মীর নামের সাথে সাথে চোখে ভেসে ওঠে যুদ্ধে আহত এক বিশাল এলাকার কথা। পৃথিবীর বুকে তাকে নিয়ে টানাটানি করা তিন দেশের যুদ্ধের দামামার মাঝে হারিয়ে যায় তার সৌন্দর্যের গল্পগাথা।
যতদূর চোখ যায় পাহাড়-সারি, টলটলে পানির লেক, রঙিন ফুলের বাগান, সবুজের সমারোহ, শীতের তুষারশুভ্র প্রান্তর-পৃথিবীর সব সৌন্দর্য যেন জমা হয়েছে এখানে এসে।
পৃথিবীর মাঝে “এক টুকরো স্বর্গ” কাশ্মীর দেখে চোখ জুড়ানোর বড্ড ইচ্ছে হয়।
আমি জানি না, এর মাঝে কোথাও যেতে পারবো কি না। কিন্তু, স্বপ্ন দেখে যাই, নিশ্চয়ই যাবো। মন ভরিয়ে, চোখ জুড়িয়ে উপভোগ করবো প্রকৃতির সৌন্দর্য।
ছবি: ইন্টারনেট
[পরবর্তী পর্বে আরো কিছু এমন আরো জায়গার কথা বলতে চাই, যদি পাঠক পড়তে চায়।]
এই পোস্টটি ব্লগারের ৫০তম পোস্ট। প্রত্যেক পাঠককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যাদের কারণে ব্লগিং এর উৎসাহ পাই।
পোস্টটি টুইটার কিংবা ফেইসবুকে শেয়ার করার জন্য শর্টলিঙ্ক: http://shorob.com/?p=7582

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন