হাইডি আর আমি ঠিক করলাম ভিয়েতনামে ব্যাক প্যাকিং এ যাবো দু সপ্তাহর
জন্য..সংগে যাবে হাইডির ৪ আর ৬ বছরের মেয়ে দুটি....আহ কি এক মহা আইডিয়া!!!
প্লান হলো হাইডি সিংগাপুরে ৫ দিন আমাদের সাথে কাটিয়ে কেম্বডিয়ায় বাচ্চাদের নিয়ে সাতদিন ব্যাক প্যাকিং করে হো চি মিন সিটিতে ১২ই জুলাই আমার সাথে যোগ দেবে।
১লা জুলাই হাইডি গ্রেস আর জ্যমাকে নিয়ে সিংগাপুরে ৫ দিন কাটিয়ে কেম্বডিয়ার পথে রওনা দিল.....সে গল্প আগেই বলেছি।
জ্যমা আর গ্রেস হাতে মেহেদি পরে ইনডিয়ান দোকানে ঘুরে ছবি তুললে কেম্বডিয়া দেখার পথে পা বাড়াল। আর আমি দিন গুনতে শুরু করলাম ১২ই জুলাই দুপুর ১২টার ফ্লাইটের!!!
১২ই জুলাই দুপুর ২টায় মাঝারি সাইজের কিন্তু চিমছাম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আর আলোকিত হো চি মিন সিটির এয়ার পোর্টে গিয়ে পৌছালাম। ইমিগ্রেশন পেরোতে গিয়ে আবারও একই সমস্যায় পরলাম বাংলেদেশি পাসপোর্ট এর জন্য। অফিসার আমাকে এক পাশে দাড় করিয়ে আমার পাসপোর্ট নিয়ে বসের কাছে গেল অনুমতি নেবার জন্য, পাসপোর্টে আমার যথাযথ ভিসা থাকা সত্তেও। আমি লোকজনে ভরা ইমোগ্রশনে একা দাড়িয়ে, নিজেকে মনে হচ্ছিলো এক বিশাল টেররিস্ট। আধা ঘন্টা পরে ছারা পেলাম।
ট্যাক্সিতে উঠে হটেলে যাবার পথে শহরটাকে দেখবার চেষ্টা করলাম কিছুটা। রাস্তা গুলো কিছুটা ঢাকার মোহম্মদপুরের মতো তবে ঢাকা ওদের চাইতে আর্কিটেকচারাল দিকদিয়ে অনেক উন্নত, বলা যায় ওরা অনেকটা কেম্বডিয়ার মত। বিল্ডিং গুলো ন্যারো আর পিছন দিকে লম্বা।
পুরোনো ধাচের। প্রচুর ছোট ছোটো রেসট্যুরেন্ট আর হোটেল, ওয়েস্টর্ান ট্যুরিস্টে ভরা শহর। রাস্তা ভরা শুধু মটর সাইকেল।
মনে হয় জন প্রতি একটা করে মটর সাইকেল আছে ওদের। মটর সাকেল ভারাও পাওয়া যায় সারাদিনের জন্য যেখানে সেখানে। ছেলে মেয়ে সবার মটর সাইকেলই একমাত্র বাহন। আবার মটরসাইকেল ড্রাইভার সহও ভাড়া পাওয়া যায়। যা আমরা পরের দিন ভাড়া করেছিলাম।
প্রচুর ইলেকট্রিসটি, ডিশ আর ইনটেরনেটের কেবল ঝুলছে রাস্তায় মাথার উপর যা আমাকে ঢাকার কথা মনে করিয়ে দিল। সিংগাপুরে সব তার মাটির নিচে তাই ওখানে ওগুলো দেখে চোখ পরল খুব বেশি।
ব্যক প্যাকিং এর প্লান তো তাই খরচ কমাবার জন্য মাঝারি টাইপরে হোটেল বুক করেছিলাম আমি আর হাইডি ইনটারনেটে সিংপুর থেকে। হোটেল গিয়ে যখন পৌছালাম তখনও হাইডি পৌছেনি তবে ওরা অন দ্যা ওয়ে।
৭ তলার উপর আমাদের রুম নো লিফ্ট !!! নট ব্যাড বাট সামথিং ফিশি ফিল করলাম রুম বয় আর কেয়ারটেকার এর আচরনে। এনি ওয়ে আঘন্টার ভেতর শুনতে পেলাম জ্যমা'র গলা " হেই কোথায় তুমি " !!!!! ওর চিৎকারে সারা হোটেল জেগে উঠল ঘুম দুপুরে !! দুবোন আমাকে পেয়ে খুশিতে উপর নিচ লাফাতে লাগলো।
৪ টার দিকে আমরা খেতে বের হলাম। যাবার সময় ক্যমেরা টা নিলাম না খুব টায়ার্ড ছিলাম ভাবলাম পরের দিন সকাল থেকে ছবি তোলা শুরু করব।
ওদের মজার রিক্সা চেপে খানিক ঘুরে, খাওয়াদাওয়া করে কাছের হস্তশিপের দোকান গুলোতে ঘুরলাম।
ওরা চমৎকার হাতে বোনা বা ক্রস স্টিচের ব্যাগ আর জুতো বানায়। চমৎকার সিল্ক স্কার্ফ তৈরী করে। আর পাপেট!!!
তবে সবার ব্যবহার খুবই রুক্ষ এটা শুরুতেই চখে পরল।
রাতে যখন রুমে ফিরলাম আমরা চার জন ই প্রচন্ড টায়য়ার্ড। বিছানায় পরে মরার মত ঘুমে ঢলে পরলাম। ঘুমানোর আগে চেক করলাম আমার ক্যামেরা আর ল্যাপটপ ঠিক আছে কিনা, দরজা বন্ধ আছে কিনা আর চাবিটা রাখলাম মিনি বারের উপর।
পরের দিন সকালে উঠে রেডি হয়ে যখন নিচে নামব, ক্যমেরা টা নিতে গিয়ে দেখি টেবিলের উপরে রাখা ক্যমেরার ব্যাগ টা উধাও!!! ওতে আমার ক্যমেরা আর দাম দুটো লেন্স ছিল। আমার তো মাথা খারাপ হবার যোগার
। তন্ন তন্ন করে রুমে খুজেও পেলামনা। নিচে রিসেপশনে যাবার জন্য বেরতেই দেখি রুমের চাবি দরজার বাইরে ডোর নবের সাথে ঝুলছে।

প্লান হলো হাইডি সিংগাপুরে ৫ দিন আমাদের সাথে কাটিয়ে কেম্বডিয়ায় বাচ্চাদের নিয়ে সাতদিন ব্যাক প্যাকিং করে হো চি মিন সিটিতে ১২ই জুলাই আমার সাথে যোগ দেবে।


১লা জুলাই হাইডি গ্রেস আর জ্যমাকে নিয়ে সিংগাপুরে ৫ দিন কাটিয়ে কেম্বডিয়ার পথে রওনা দিল.....সে গল্প আগেই বলেছি।

জ্যমা আর গ্রেস হাতে মেহেদি পরে ইনডিয়ান দোকানে ঘুরে ছবি তুললে কেম্বডিয়া দেখার পথে পা বাড়াল। আর আমি দিন গুনতে শুরু করলাম ১২ই জুলাই দুপুর ১২টার ফ্লাইটের!!!

১২ই জুলাই দুপুর ২টায় মাঝারি সাইজের কিন্তু চিমছাম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আর আলোকিত হো চি মিন সিটির এয়ার পোর্টে গিয়ে পৌছালাম। ইমিগ্রেশন পেরোতে গিয়ে আবারও একই সমস্যায় পরলাম বাংলেদেশি পাসপোর্ট এর জন্য। অফিসার আমাকে এক পাশে দাড় করিয়ে আমার পাসপোর্ট নিয়ে বসের কাছে গেল অনুমতি নেবার জন্য, পাসপোর্টে আমার যথাযথ ভিসা থাকা সত্তেও। আমি লোকজনে ভরা ইমোগ্রশনে একা দাড়িয়ে, নিজেকে মনে হচ্ছিলো এক বিশাল টেররিস্ট। আধা ঘন্টা পরে ছারা পেলাম।

ট্যাক্সিতে উঠে হটেলে যাবার পথে শহরটাকে দেখবার চেষ্টা করলাম কিছুটা। রাস্তা গুলো কিছুটা ঢাকার মোহম্মদপুরের মতো তবে ঢাকা ওদের চাইতে আর্কিটেকচারাল দিকদিয়ে অনেক উন্নত, বলা যায় ওরা অনেকটা কেম্বডিয়ার মত। বিল্ডিং গুলো ন্যারো আর পিছন দিকে লম্বা।

পুরোনো ধাচের। প্রচুর ছোট ছোটো রেসট্যুরেন্ট আর হোটেল, ওয়েস্টর্ান ট্যুরিস্টে ভরা শহর। রাস্তা ভরা শুধু মটর সাইকেল।


মনে হয় জন প্রতি একটা করে মটর সাইকেল আছে ওদের। মটর সাকেল ভারাও পাওয়া যায় সারাদিনের জন্য যেখানে সেখানে। ছেলে মেয়ে সবার মটর সাইকেলই একমাত্র বাহন। আবার মটরসাইকেল ড্রাইভার সহও ভাড়া পাওয়া যায়। যা আমরা পরের দিন ভাড়া করেছিলাম।

প্রচুর ইলেকট্রিসটি, ডিশ আর ইনটেরনেটের কেবল ঝুলছে রাস্তায় মাথার উপর যা আমাকে ঢাকার কথা মনে করিয়ে দিল। সিংগাপুরে সব তার মাটির নিচে তাই ওখানে ওগুলো দেখে চোখ পরল খুব বেশি।
ব্যক প্যাকিং এর প্লান তো তাই খরচ কমাবার জন্য মাঝারি টাইপরে হোটেল বুক করেছিলাম আমি আর হাইডি ইনটারনেটে সিংপুর থেকে। হোটেল গিয়ে যখন পৌছালাম তখনও হাইডি পৌছেনি তবে ওরা অন দ্যা ওয়ে।
৭ তলার উপর আমাদের রুম নো লিফ্ট !!! নট ব্যাড বাট সামথিং ফিশি ফিল করলাম রুম বয় আর কেয়ারটেকার এর আচরনে। এনি ওয়ে আঘন্টার ভেতর শুনতে পেলাম জ্যমা'র গলা " হেই কোথায় তুমি " !!!!! ওর চিৎকারে সারা হোটেল জেগে উঠল ঘুম দুপুরে !! দুবোন আমাকে পেয়ে খুশিতে উপর নিচ লাফাতে লাগলো।

৪ টার দিকে আমরা খেতে বের হলাম। যাবার সময় ক্যমেরা টা নিলাম না খুব টায়ার্ড ছিলাম ভাবলাম পরের দিন সকাল থেকে ছবি তোলা শুরু করব।

ওদের মজার রিক্সা চেপে খানিক ঘুরে, খাওয়াদাওয়া করে কাছের হস্তশিপের দোকান গুলোতে ঘুরলাম।

ওরা চমৎকার হাতে বোনা বা ক্রস স্টিচের ব্যাগ আর জুতো বানায়। চমৎকার সিল্ক স্কার্ফ তৈরী করে। আর পাপেট!!!


তবে সবার ব্যবহার খুবই রুক্ষ এটা শুরুতেই চখে পরল।

রাতে যখন রুমে ফিরলাম আমরা চার জন ই প্রচন্ড টায়য়ার্ড। বিছানায় পরে মরার মত ঘুমে ঢলে পরলাম। ঘুমানোর আগে চেক করলাম আমার ক্যামেরা আর ল্যাপটপ ঠিক আছে কিনা, দরজা বন্ধ আছে কিনা আর চাবিটা রাখলাম মিনি বারের উপর।
পরের দিন সকালে উঠে রেডি হয়ে যখন নিচে নামব, ক্যমেরা টা নিতে গিয়ে দেখি টেবিলের উপরে রাখা ক্যমেরার ব্যাগ টা উধাও!!! ওতে আমার ক্যমেরা আর দাম দুটো লেন্স ছিল। আমার তো মাথা খারাপ হবার যোগার


ক্যামেরা হাড়িয়ে তো আমার আধা মরা অবস্থা! নীচে রিসেপশনে গিয়ে হাজারও হাও
কাউ করে কোন লাভ হলো না। ওদের নীর্লিপ্ত ভাবে এক কথা " আমরা জানিনা কিছু।
পুলিশ ডাকা হলো। পুলিশ ব্যাটা এক বর্ণ ইংরেজি বোঝে না। কেয়ারটেকার মহিলা
ওকে ট্রন্সলেশন করে কি বলল একমাত্র ওরাই জানে। পুলিশ শালা ( মাফ করবেন এটা
লেখার জন্য, এর চাইতে ভাল কথা আমার মাথায় আসেনা ওদের জন্য) উপরে গিয়ে রুম
চেক করে আমাদের বলল থানায় গিয়ে রিপোর্ট করতে। সে কিছু করতে পারবে না জানাল।
থানায় গিয়ে দেখি করুন আবস্থা থানার। একজন অফিসারও এক বর্ণ ইংরেজি বোঝেনা, বলে না। আবারও সেই হোটেলের কেয়ার টেকার মহিলা তর্জনা শুরু করল আমার কথা। আল্লাহই জানে কি বললো। একটু পরে ও আমাকে বলে যে আমি নাকি রাতে সাবাই যখন ঘুমিয়ে তখন চুপি চুপি নীচে গিয়ে আমার বয় ফ্রন্ডকে ক্যামেরা পাচার করে দিয়েছি আর এখন বলছি আমি ক্যামেরা রুম থেকে হাড়িয়েছি।
শালীর ( মাফ করবেন আবারও) কথা শুনে আমার তো হতভম্ভ অবস্থা, রাগে মাথা জ্বলতে লাগলো। এই কথার উত্তর কিদেব বুঝতে পারছিলামনা, মনে মনে কষে চড় মারার প্রচন্ড ইচ্ছেটা চাপা দিলাম। হাইডি এগিয়ে এসে ওর কথার প্রতিবাদ করা শুরু করল। আবশেষে কেয়ারটেকার হাল ছাড়ল আমাকে উল্টা দোষ দেবার প্রচেষ্টায়। এমন সময় জ্যমা আর গ্রেসের টয়লেট চাপল। হাইডি ওদের নিয়ে থানার টয়লেটে গিয়ে দেখে ওখানে নামে মাত্র একখানা গর্ত, যা কিছু করার তা করবার জন্য তাও আবার উপচে পরছে। ফিরে এসে বাচ্চাদের নিয়ে ভেতরে বসতে এক অফিসার এসে বলে যে ও বাচ্চাদের নিয়ে ভেতরে বসতে পারবে না। অভদ্রের মতা বাচ্চা দুটেকে নিয়ে থানা থেকে ওদের তিন জন কে বের করে দিল। তিন বেচার গরমে নোংড়া, ব্যস্ত রাস্তায় দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকলো আমার। আমাকে দিয়ে ওরা তিনবার রিপোর্ট লেখালো আর ঐ কেয়ারটেকার শালীকে দিয়ে তার অনুবাদ লেখালো গড নোজ হোয়াট দ্যা হেল সি রোট। আবার পাচ ইউ এস ডলার ঘুষও নিলো তাড়াতারি কাজ করে দেবার জন্য। এই করতে ই আমাদের দুপুর।
মন প্রচন্ড খারাপ। সব মিলিয়ে আমার সিংগাপুর ডলার ৩,০০০ এর মত গেছে ক্যামেরা আর লেন্স সহ। বেরানোর মজাটাই চলে গেল। আবার ভাবলাম আজ মাত্র প্রথম দিন আরো ১৩ দিন থাকব এই দেশ, এভাবে যদি মন খারাপ করে থাকি তাহলে হাইডি আর বাচ্চাদের বেড়ানোটাও নষ্ট হয়ে যাবে। আর মন খারাপ করলেত ক্যামেরা ফিরে আসবেনা। তাছাড়া সান্তনা আমার ইনস্যুরেন্স করা আছে তাই কিছু টাকা ইনস্যুরেন্স কাভার করবে।
আমারা চার জনই টায়ার্ড আর ক্ষুধার্ত ছিলাম। খাবার দোকানে গিয়ে কিছু খাওয়ালাম বাচ্চাদের। আমি আর হাইডি দুটো করে সিংগাপুর স্লিং নিলাম মাথা ঠান্ডা করবার জন্য। এসবের মাঝে পিচ্চি দুটেোর নন স্টপ মাড়ামাড়ি, কান্না কাটি, ঘন ঘন পানি পিপাসা আর টয়লেট চাপছে। আমাদের মাথা ঠান্ডা রাখা সেই মুহুর্তে সবচাইতে ইমপর্টেন্ট
! আর সিংগাপুর শ্লিং ওখানে $৩
। এত সস্তা কল্পনাও করা যায়না সিংগাপুরে। 


আমরা তো তিন লাফ এর পর থেকে ব্রেক ফাস্ট করার সিদ্ধান্ত নিলাম সিংহাপুর স্লিং দিয়ে....

মাথা ঠান্ডা করে ঠিক করলাম সব ভুলে আমরা এখন বেরাবো। চালক সহ মটরসাইকেলের পিঠে চড়ে রওনা দেব ওয়ার মিউজিয়াম দেখতে। এখন দুই পিচ্চিই ওদের মা'র সাথে যাবে, এদিকে এক মটরসাইকেলে একজন এডাল্ট ও একজন বাচ্চা নেবে মাত্র
।
মহা ঝামেলায় পড়লাম। তবু হাইডি জোড় করে জ্যমাকে আমার কোলে দিয়ে রওনা দিতেই
জ্যমা গলা ফাটিয়ে চীৎকার জু্ড়ে দিল আর চলন্ত বাইক থেকে লাফিয়ে পড়ার চুড়ান্ত
পর্যায়ের চেষ্টা চালাল।
অবশেষে বাদ্ধ হয়ে ওকে চলন্ত বাইক থেকে ট্রান্সফার করা হলো হাইডির বাইকে সে এক দৃশ্য আর কি।
পরে অবশ্য ও আর এমন করে নি। 
ওয়ার মিউজিয়ামে গিয়ে অবাক হয়ে দেখলাম আমেরিকা ভিয়েতনামের যুদ্ধ বিমান, হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্ক, মরটার সব ওরা সাজিয়ে রেখছে।
প্রচুর অত্যাচারের কাহিনি সহ কত শত ছবি
। অমানবিক ভাবে আমেরিকানদের সাধারণ মানুষ আর সাংবাদিকদের উপর অত্যাচার আর খুনের ছবি। 
ওখানে সেই যুদ্ধে মৃত সৈনিকদের ব্যবহার করা নিজের নাম আর কোন অস্ত্র সে ব্যবহার করছে তা খোদাই করা লাইটার দেখলাম। ওগুলো ওরা বিক্র করছে। এত সৈনিক মারা গেছে যে এখনও বিক্রি করে শেষ করতে পারেনি। আমি ক্লিফের জন্য একটা কিনলাম। লাইটারটা হাতে নিতেই যেন শত শত কষ্টের ইতিহাস আর এক যোদ্ধা সৈনিকের সংগ্রাম আর ইমোশোন অনুভব করলাম।
এক পিঠে ওতে খোদাই করে লেখা আছে :
VIETNAM
BIEN HOA
67-68
FIGHTER BY DAY
LOVER BY NIGHT
DRUNKARD BY CHOICE
SOLDIER BY MISTAKE
অন্য পিঠে :
একটা যুদ্ধ ট্যাঙ্কের ছবি খোদাই করা আর তার উপর খোদাই করে লেখা:
ARMOR.
মিউজিয়ামের একটা আর্ট গ্যালারি আছে যেখানে আজকের প্রজন্মের শিশুরা নতুন দিনের প্রত্যাশা নিয়ে ছবি একেছে যুদ্ধের আঘাতে ভেংগে যাওয়া জাতীর জন্য।
হাইডি জ্যমা আর গ্রেসকে তা এক্সপ্লেইন করে বলল। চমৎকার সব ছবিতে পুরোটা দেয়াল ভরা। যেকোন বাচ্চা সেখানে ছবি পাঠাতে পারে।
এর পরে গেলাম রিভার সাইডে। একটা ছোট নদীর পাড়ে কিছু বড় বড় হোটেল আর রেস্ট্ুরেন্ট গড়ে উঠেছে। চমৎকার খোলা মেলা, পরিস্কার আর সুন্দর জয়গাটা। কিছু কিছু রেস্টুরেন্ট ছোট ছোট বোটের ভেতর সুন্দর করে লাইট দিয়ে সাজানো। চমৎকার আলোক সজ্জা হয় রাতে।
রিভার সাইডে একটা আর্ট গ্যালারিটে ঢু মারলাম যেখানে বাচ্চারা লেগে গেল ছবি বাধানোর কাজে সাহায্য করতে
।
বিশাল লম্বা একটা ছবি দেখলাম দেয়ালে টাংগানো ২০/২৫ ফিট লম্বা, পুরেো হো চি মিন সিটি তাতে ধরা !!
ওদেশে রাস্তা পেরবার কোন পেডিস্ট্রয়ান সিগনালের ব্যবস্থা নেই। যে যেমন ভাবে পারে রাস্তা পেরয় আর কেউ কাউকে পথ দেয়না, পারলে গায়ের উপর উঠে আসে। যেটা কেম্বডিয়ায় দেখেছি সবাই খুবই আন্ডারস্টানডিং মাইন্ডের, সবাই সবাই কে সাহায্য করে পথা করে দেয়। এখানে সেই কার্টেসিটা কোথাও খুজে পেলামনা। দুই পিচ্চিকে নিয়ে রাস্তা পেরতে আমাদের নাজেহাল অবস্থা প্রত্যেক বার।
রাতে হোটেলে ফিরতেই কেয়ারটেকার আরেক দফা আমাকে আক্রমনের অপচেষ্টা চালালো.....চোরের মায়ের বড় গলা আর কি
!!! মন ছিল না ওকে কিছু বলার, আবারও ওকে থাপ্পড় মাড়ার ইচ্ছেটা চাপা দিয়ে আমরা ঘুমাতে গেলাম।
পরের দিন সন্ধে ৭টায় আমাদের হানোই যাবার ফ্লাইট !!!! হানোই ভিয়েতনামের আরেকটা শহর। হো চি মিন থাকে ২ ঘন্টার ফ্লাইট....
থানায় গিয়ে দেখি করুন আবস্থা থানার। একজন অফিসারও এক বর্ণ ইংরেজি বোঝেনা, বলে না। আবারও সেই হোটেলের কেয়ার টেকার মহিলা তর্জনা শুরু করল আমার কথা। আল্লাহই জানে কি বললো। একটু পরে ও আমাকে বলে যে আমি নাকি রাতে সাবাই যখন ঘুমিয়ে তখন চুপি চুপি নীচে গিয়ে আমার বয় ফ্রন্ডকে ক্যামেরা পাচার করে দিয়েছি আর এখন বলছি আমি ক্যামেরা রুম থেকে হাড়িয়েছি।
শালীর ( মাফ করবেন আবারও) কথা শুনে আমার তো হতভম্ভ অবস্থা, রাগে মাথা জ্বলতে লাগলো। এই কথার উত্তর কিদেব বুঝতে পারছিলামনা, মনে মনে কষে চড় মারার প্রচন্ড ইচ্ছেটা চাপা দিলাম। হাইডি এগিয়ে এসে ওর কথার প্রতিবাদ করা শুরু করল। আবশেষে কেয়ারটেকার হাল ছাড়ল আমাকে উল্টা দোষ দেবার প্রচেষ্টায়। এমন সময় জ্যমা আর গ্রেসের টয়লেট চাপল। হাইডি ওদের নিয়ে থানার টয়লেটে গিয়ে দেখে ওখানে নামে মাত্র একখানা গর্ত, যা কিছু করার তা করবার জন্য তাও আবার উপচে পরছে। ফিরে এসে বাচ্চাদের নিয়ে ভেতরে বসতে এক অফিসার এসে বলে যে ও বাচ্চাদের নিয়ে ভেতরে বসতে পারবে না। অভদ্রের মতা বাচ্চা দুটেকে নিয়ে থানা থেকে ওদের তিন জন কে বের করে দিল। তিন বেচার গরমে নোংড়া, ব্যস্ত রাস্তায় দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকলো আমার। আমাকে দিয়ে ওরা তিনবার রিপোর্ট লেখালো আর ঐ কেয়ারটেকার শালীকে দিয়ে তার অনুবাদ লেখালো গড নোজ হোয়াট দ্যা হেল সি রোট। আবার পাচ ইউ এস ডলার ঘুষও নিলো তাড়াতারি কাজ করে দেবার জন্য। এই করতে ই আমাদের দুপুর।
মন প্রচন্ড খারাপ। সব মিলিয়ে আমার সিংগাপুর ডলার ৩,০০০ এর মত গেছে ক্যামেরা আর লেন্স সহ। বেরানোর মজাটাই চলে গেল। আবার ভাবলাম আজ মাত্র প্রথম দিন আরো ১৩ দিন থাকব এই দেশ, এভাবে যদি মন খারাপ করে থাকি তাহলে হাইডি আর বাচ্চাদের বেড়ানোটাও নষ্ট হয়ে যাবে। আর মন খারাপ করলেত ক্যামেরা ফিরে আসবেনা। তাছাড়া সান্তনা আমার ইনস্যুরেন্স করা আছে তাই কিছু টাকা ইনস্যুরেন্স কাভার করবে।
আমারা চার জনই টায়ার্ড আর ক্ষুধার্ত ছিলাম। খাবার দোকানে গিয়ে কিছু খাওয়ালাম বাচ্চাদের। আমি আর হাইডি দুটো করে সিংগাপুর স্লিং নিলাম মাথা ঠান্ডা করবার জন্য। এসবের মাঝে পিচ্চি দুটেোর নন স্টপ মাড়ামাড়ি, কান্না কাটি, ঘন ঘন পানি পিপাসা আর টয়লেট চাপছে। আমাদের মাথা ঠান্ডা রাখা সেই মুহুর্তে সবচাইতে ইমপর্টেন্ট










মাথা ঠান্ডা করে ঠিক করলাম সব ভুলে আমরা এখন বেরাবো। চালক সহ মটরসাইকেলের পিঠে চড়ে রওনা দেব ওয়ার মিউজিয়াম দেখতে। এখন দুই পিচ্চিই ওদের মা'র সাথে যাবে, এদিকে এক মটরসাইকেলে একজন এডাল্ট ও একজন বাচ্চা নেবে মাত্র






ওয়ার মিউজিয়ামে গিয়ে অবাক হয়ে দেখলাম আমেরিকা ভিয়েতনামের যুদ্ধ বিমান, হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্ক, মরটার সব ওরা সাজিয়ে রেখছে।





প্রচুর অত্যাচারের কাহিনি সহ কত শত ছবি





ওখানে সেই যুদ্ধে মৃত সৈনিকদের ব্যবহার করা নিজের নাম আর কোন অস্ত্র সে ব্যবহার করছে তা খোদাই করা লাইটার দেখলাম। ওগুলো ওরা বিক্র করছে। এত সৈনিক মারা গেছে যে এখনও বিক্রি করে শেষ করতে পারেনি। আমি ক্লিফের জন্য একটা কিনলাম। লাইটারটা হাতে নিতেই যেন শত শত কষ্টের ইতিহাস আর এক যোদ্ধা সৈনিকের সংগ্রাম আর ইমোশোন অনুভব করলাম।
এক পিঠে ওতে খোদাই করে লেখা আছে :
VIETNAM
BIEN HOA
67-68
FIGHTER BY DAY
LOVER BY NIGHT
DRUNKARD BY CHOICE
SOLDIER BY MISTAKE
অন্য পিঠে :
একটা যুদ্ধ ট্যাঙ্কের ছবি খোদাই করা আর তার উপর খোদাই করে লেখা:
ARMOR.

মিউজিয়ামের একটা আর্ট গ্যালারি আছে যেখানে আজকের প্রজন্মের শিশুরা নতুন দিনের প্রত্যাশা নিয়ে ছবি একেছে যুদ্ধের আঘাতে ভেংগে যাওয়া জাতীর জন্য।

হাইডি জ্যমা আর গ্রেসকে তা এক্সপ্লেইন করে বলল। চমৎকার সব ছবিতে পুরোটা দেয়াল ভরা। যেকোন বাচ্চা সেখানে ছবি পাঠাতে পারে।

এর পরে গেলাম রিভার সাইডে। একটা ছোট নদীর পাড়ে কিছু বড় বড় হোটেল আর রেস্ট্ুরেন্ট গড়ে উঠেছে। চমৎকার খোলা মেলা, পরিস্কার আর সুন্দর জয়গাটা। কিছু কিছু রেস্টুরেন্ট ছোট ছোট বোটের ভেতর সুন্দর করে লাইট দিয়ে সাজানো। চমৎকার আলোক সজ্জা হয় রাতে।

রিভার সাইডে একটা আর্ট গ্যালারিটে ঢু মারলাম যেখানে বাচ্চারা লেগে গেল ছবি বাধানোর কাজে সাহায্য করতে


বিশাল লম্বা একটা ছবি দেখলাম দেয়ালে টাংগানো ২০/২৫ ফিট লম্বা, পুরেো হো চি মিন সিটি তাতে ধরা !!


ওদেশে রাস্তা পেরবার কোন পেডিস্ট্রয়ান সিগনালের ব্যবস্থা নেই। যে যেমন ভাবে পারে রাস্তা পেরয় আর কেউ কাউকে পথ দেয়না, পারলে গায়ের উপর উঠে আসে। যেটা কেম্বডিয়ায় দেখেছি সবাই খুবই আন্ডারস্টানডিং মাইন্ডের, সবাই সবাই কে সাহায্য করে পথা করে দেয়। এখানে সেই কার্টেসিটা কোথাও খুজে পেলামনা। দুই পিচ্চিকে নিয়ে রাস্তা পেরতে আমাদের নাজেহাল অবস্থা প্রত্যেক বার।
রাতে হোটেলে ফিরতেই কেয়ারটেকার আরেক দফা আমাকে আক্রমনের অপচেষ্টা চালালো.....চোরের মায়ের বড় গলা আর কি

পরের দিন সন্ধে ৭টায় আমাদের হানোই যাবার ফ্লাইট !!!! হানোই ভিয়েতনামের আরেকটা শহর। হো চি মিন থাকে ২ ঘন্টার ফ্লাইট....
পরের দিন ভোরে আমাদের হালং বে যাবার কথা, সকাল ৮ টায় বাস পিকআপ করবে। সেদিন
হটেলে ফিরে নিচে লবিতে দুই বাংগালী ছেলের সাথে কথা। ওরা ঐ হটেলেই ছিল। আমি
বাংগালী সেটা হোটেল রিসেপশন থেকে জেনে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল লবিতে।
বয়স ২৭/২৮ হবে ঢাকা থেকে গেছে দুজন ছেলে হানইতে কাজ করতে। কথা বলে জানলাম বাংলাদেশ থেকে কোন এক বাংগালী এজেন্ট ওদের পাঠিয়েছে কাজের কথা বলে। আসবার আগে ওরা ওয়ার্ক পারমিট বা এপয়েন্টমেন্ট লেটার কিছু দেখার চেষ্টা পর্যন্ত করেনি এজেন্টের কাছ থেকে। ভিয়েতনামে হানোই য়ে আরেক বাংগালি ওদের এয়ার পোর্ট থেকে রিসিভ করে ঐ হটেলে নিয়ে তুলেছে। আজ / কাল করে কাজ দেবার নামে ওদের ওখানে ঝুলিয়ে রেখছে গত একমাস। গত তিন দিন ধরে সেই লোক গায়েব হয়ে গেছে। তার ফোনও বন্ধ। এদিকে এই দুই ছেলের ভিসা শেষ, খাবার কেনার বা হোটেলের ভাড়া দেবার টাকাও নেই। হোটেল ওদের ফ্রি রেখেছে আর খাইয়েছে গত দুদিন এখন হোটেল ওদের বের করে দিয়েছে। ওরা জানেনা কি করবে বা কোথায় যাবে। ওদের কাছে যে কম্পানি তে চাকরি দিয়ে নিয়ে এসেছে তার ঠিকানা পর্যন্ত নেই, ওরা আসবার আগে ঠিকানা বা কম্পানির নাম পর্যন্ত জানতে চায়নি এজেন্টের কাছে, কি কাজে নিয়ে আসছে তাও পর্যন্ত জানে না।
বললাম "এরকম ভুল একজন অশিক্ষীত বাংগালী গ্রামের মেয়ে করলে সাজে আপনাদের মত শিক্ষিত ম্যাচিউর ছেলে হয়ে এরকম বোকার মত কাজ করলে সাজে না।" যাই হোক ওদে বাংলাদেশ এম্বাসিতে পাঠাবার ব্যবস্থা করলাম। কারন এক মাত্র এম্বাসি ওদের সাহায্য করতে পারবে। ওদের ভিসা নেই তাছাড়া ফেরার টিকেটও নেই।
যাই হোক পরের দিন আর ওদের দেখিনি। সকালে ৮টার দিকে বাসে উঠলাম। বাস কন্ডাক্টর যদিও বলল ঘাটে পৌছুতে ২ ঘন্টা লাগবে কিনতু পৌছাতে চার ঘন্টা লাগলো।
পৌছানোর পর আমাদের ওরা স্টানডার্ড বোটে পাঠাবার ব্যবস্থা করেছে দেখে আমারা বললাম আমরা সুপার ডিলাক্স বুক করেছি এবং সেই পরিমানের বেশি টাকা দিয়েছি। কিন্তু ওড়া ওদের এন্ট্রি আর বুকিং চেক করে বললো আমাদের নামে স্টান্ডার্ড বোট বুকিং দেয়া আছে। প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো আবার ধরা খাবার জন্য।
আমাদের সথে যারা ঐ একই বোটে ছিল তাদের জিঙ্গেস করে জানলাম ওরা আমাদের অর্ধেক টাকা দিয়ে দুই রাত তিন দিনের জন্য ভারা করেছে। আমারা ওদের ডাবল টাকা দিয়ে এক রাত দুই দিনের বুকিং দিয়েছি।
কিন্তু ভুল বোটে পাঠানো হলো আমাদের। সুপার ডিলাক্সের বদলে স্টান্ডার্ড।
আবারও মন খারাপ করে সময় নষ্ট না করে আমারা ঠিক করলাম সময়টা এনজয় করার। আমাদের বোট চলল সাগড়ের পথে হালং বে... দুপুর ২ টার দিকে।
চমৎকার ভিউ....আর তার সাথে সার্ভ করল চমৎকার লান্চ। বিশাল ভাজা মাছ, কলমি শাক, মিক্স ভেজিটেবল আর সালাদ....। আমারা খিদেয় মরছিলাম সবাই মিলে ঝাপিয়ে পরলাম খাবারে উপর।
পিচ্চি দুটো খুব জমিয়ে বসল বোটের অন্য ট্যুরিস্টদের সাথে।
ড্রাইভারের কোলে বসে বোট চালাল কিছুক্ষন!!!
ঘন্টা খানেক পর বে এর পাহাড় গুলোয় পৌছালাম। সাগড়ের মাঝ ছোট ছোট পাহাড় মাথাতুলে দাড়িয়ে আছে, ভেতরে বিশাল বিশাল লাইম স্টোনের গুহা নিয়ে।
বোট থেকে নেমে আমারা পাহাড় বেয়ে গুহায় ঢুকলাম।
গুহা গুলো নানান রং এর লাইট দিয়ে আবছায়া মত আলোকিত করা, তাতে রহস্য ময় হয়ে উঠেছে ভেতরটা।
চমৎকার প্রাকৃতিক লাইম স্টোনের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
পিচ্চি দুটেো খুব মজা পেল পাহাড় ভেংগে গুহায় ঢুকতে।
ওখানে সেরে আমারা গেলাম নৌকা চড়ে পাহাড়ে ঘেড়া লেগুন আর লাইম স্টোন দেখতে।
চমৎকার শান্ত আর সুন্দর প্রকৃতি দেখে আমারা সবাই চুপচাপ প্রকৃতির মাঝে ডুবে গিয়ে প্রকৃতিকে উপভোগ করলাম ঘন্টা দুই।
বোটে ফিরে যখন নিচে আমাদের রুমে গেলাম মনটা আবারও খারাপ হয়ে গেল। সিংগেল বেডের অর্ধেক সাইজের দুটো বেড ঘড়ের বেশির ভাগ জায়গা দখল করে আছে। নো এয়ারকন, হাটবার বা লাগেজ রাখবার জায়গা নেই পর্যন্ত। আমার যে ছবি দেখে যে রুম বুক করেছি তাতে দুটো বিশাল ডাবল বেড এয়ারকন, সোফা...।
রাতে চমৎকার ডিনারের পর বাচ্চারা বিছানায় গেলে আমারা বড়রা তারা ভড়া আকাশের নিচে ডেকের উপর ডেক চেয়ারে গা এলিয়ে চমৎকার সাময় কাটালাম। অসাধারন অভিঙ্গতা সাগরের মাঝে লেগুন গুলোতে হাড়িয়ে যওযা...।
পরের দিন আমরা গেলাম কায়াকিতে। বাচ্চারা গেল আমাদের সাথে। জ্যমা আমার সাথে সামনের সিটে গ্রেস পিছনের সিটে হাইডির সাথে। নৌকো আমি কোনদিন বাইনি এর আগে। আর কায়াকি বেয়ে আমরা দুটো মেয়ে দুটো বাচ্চা নিয়ে সাগরে চলে গেলাম। অসাধারন ব্যপার আর কি!!!!
দুপুরের দিকে ফেরা শুরু হলো। ঘাটে এসে দেখি আমাদের নিতে যে বাস আসবার কথা সেটা কখন আসবে কেউ জানে না। আমারা সবাই লাগেজ নিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তার উপর টিপ টিপ বৃষ্টির ভেতর দাড়িয়ে বাসের অপেক্ষায়, কোন শেল্টার নেইযে দাড়াব। আবার শেল্টারের নিচে গেলে বাস মিস করার সম্ভবনা।
তিন ঘন্টা পরে বাস এলো। হানোই ফিরতে সন্ধে হলো। আবারও হোটাল খোজা শুরু করালাম কারন যে হোটেলে হালং বে যাবার আগে ছিলাম তাতে রুম নেই। যা হোক একটা হোটেল পাওয়া গেল। লাগেজ রেখে গেলাম ট্যুর কম্পানির কাছে টাকা ফেরত নিতে। টাকা ফেরত দিল আমাদের চিৎকার চেচামেচিতে। টিকেট কাটলাম "নিন বিন" যাবার জন্য পরের দিন। ডিনার করে রুমে ফিরে যথারিতী টায়ার্ড আর ঘুমে ঢলে পড়া "নিন বিনের" স্বপ্ন নিয়ে আর সুদিন/ সুসময়ের আশা নিয়ে।
বয়স ২৭/২৮ হবে ঢাকা থেকে গেছে দুজন ছেলে হানইতে কাজ করতে। কথা বলে জানলাম বাংলাদেশ থেকে কোন এক বাংগালী এজেন্ট ওদের পাঠিয়েছে কাজের কথা বলে। আসবার আগে ওরা ওয়ার্ক পারমিট বা এপয়েন্টমেন্ট লেটার কিছু দেখার চেষ্টা পর্যন্ত করেনি এজেন্টের কাছ থেকে। ভিয়েতনামে হানোই য়ে আরেক বাংগালি ওদের এয়ার পোর্ট থেকে রিসিভ করে ঐ হটেলে নিয়ে তুলেছে। আজ / কাল করে কাজ দেবার নামে ওদের ওখানে ঝুলিয়ে রেখছে গত একমাস। গত তিন দিন ধরে সেই লোক গায়েব হয়ে গেছে। তার ফোনও বন্ধ। এদিকে এই দুই ছেলের ভিসা শেষ, খাবার কেনার বা হোটেলের ভাড়া দেবার টাকাও নেই। হোটেল ওদের ফ্রি রেখেছে আর খাইয়েছে গত দুদিন এখন হোটেল ওদের বের করে দিয়েছে। ওরা জানেনা কি করবে বা কোথায় যাবে। ওদের কাছে যে কম্পানি তে চাকরি দিয়ে নিয়ে এসেছে তার ঠিকানা পর্যন্ত নেই, ওরা আসবার আগে ঠিকানা বা কম্পানির নাম পর্যন্ত জানতে চায়নি এজেন্টের কাছে, কি কাজে নিয়ে আসছে তাও পর্যন্ত জানে না।
বললাম "এরকম ভুল একজন অশিক্ষীত বাংগালী গ্রামের মেয়ে করলে সাজে আপনাদের মত শিক্ষিত ম্যাচিউর ছেলে হয়ে এরকম বোকার মত কাজ করলে সাজে না।" যাই হোক ওদে বাংলাদেশ এম্বাসিতে পাঠাবার ব্যবস্থা করলাম। কারন এক মাত্র এম্বাসি ওদের সাহায্য করতে পারবে। ওদের ভিসা নেই তাছাড়া ফেরার টিকেটও নেই।
যাই হোক পরের দিন আর ওদের দেখিনি। সকালে ৮টার দিকে বাসে উঠলাম। বাস কন্ডাক্টর যদিও বলল ঘাটে পৌছুতে ২ ঘন্টা লাগবে কিনতু পৌছাতে চার ঘন্টা লাগলো।

পৌছানোর পর আমাদের ওরা স্টানডার্ড বোটে পাঠাবার ব্যবস্থা করেছে দেখে আমারা বললাম আমরা সুপার ডিলাক্স বুক করেছি এবং সেই পরিমানের বেশি টাকা দিয়েছি। কিন্তু ওড়া ওদের এন্ট্রি আর বুকিং চেক করে বললো আমাদের নামে স্টান্ডার্ড বোট বুকিং দেয়া আছে। প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো আবার ধরা খাবার জন্য।

আমাদের সথে যারা ঐ একই বোটে ছিল তাদের জিঙ্গেস করে জানলাম ওরা আমাদের অর্ধেক টাকা দিয়ে দুই রাত তিন দিনের জন্য ভারা করেছে। আমারা ওদের ডাবল টাকা দিয়ে এক রাত দুই দিনের বুকিং দিয়েছি।

কিন্তু ভুল বোটে পাঠানো হলো আমাদের। সুপার ডিলাক্সের বদলে স্টান্ডার্ড।
আবারও মন খারাপ করে সময় নষ্ট না করে আমারা ঠিক করলাম সময়টা এনজয় করার। আমাদের বোট চলল সাগড়ের পথে হালং বে... দুপুর ২ টার দিকে।

চমৎকার ভিউ....আর তার সাথে সার্ভ করল চমৎকার লান্চ। বিশাল ভাজা মাছ, কলমি শাক, মিক্স ভেজিটেবল আর সালাদ....। আমারা খিদেয় মরছিলাম সবাই মিলে ঝাপিয়ে পরলাম খাবারে উপর।

পিচ্চি দুটো খুব জমিয়ে বসল বোটের অন্য ট্যুরিস্টদের সাথে।

ড্রাইভারের কোলে বসে বোট চালাল কিছুক্ষন!!!

ঘন্টা খানেক পর বে এর পাহাড় গুলোয় পৌছালাম। সাগড়ের মাঝ ছোট ছোট পাহাড় মাথাতুলে দাড়িয়ে আছে, ভেতরে বিশাল বিশাল লাইম স্টোনের গুহা নিয়ে।

বোট থেকে নেমে আমারা পাহাড় বেয়ে গুহায় ঢুকলাম।

গুহা গুলো নানান রং এর লাইট দিয়ে আবছায়া মত আলোকিত করা, তাতে রহস্য ময় হয়ে উঠেছে ভেতরটা।

চমৎকার প্রাকৃতিক লাইম স্টোনের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।


পিচ্চি দুটেো খুব মজা পেল পাহাড় ভেংগে গুহায় ঢুকতে।

ওখানে সেরে আমারা গেলাম নৌকা চড়ে পাহাড়ে ঘেড়া লেগুন আর লাইম স্টোন দেখতে।

চমৎকার শান্ত আর সুন্দর প্রকৃতি দেখে আমারা সবাই চুপচাপ প্রকৃতির মাঝে ডুবে গিয়ে প্রকৃতিকে উপভোগ করলাম ঘন্টা দুই।



বোটে ফিরে যখন নিচে আমাদের রুমে গেলাম মনটা আবারও খারাপ হয়ে গেল। সিংগেল বেডের অর্ধেক সাইজের দুটো বেড ঘড়ের বেশির ভাগ জায়গা দখল করে আছে। নো এয়ারকন, হাটবার বা লাগেজ রাখবার জায়গা নেই পর্যন্ত। আমার যে ছবি দেখে যে রুম বুক করেছি তাতে দুটো বিশাল ডাবল বেড এয়ারকন, সোফা...।


রাতে চমৎকার ডিনারের পর বাচ্চারা বিছানায় গেলে আমারা বড়রা তারা ভড়া আকাশের নিচে ডেকের উপর ডেক চেয়ারে গা এলিয়ে চমৎকার সাময় কাটালাম। অসাধারন অভিঙ্গতা সাগরের মাঝে লেগুন গুলোতে হাড়িয়ে যওযা...।

পরের দিন আমরা গেলাম কায়াকিতে। বাচ্চারা গেল আমাদের সাথে। জ্যমা আমার সাথে সামনের সিটে গ্রেস পিছনের সিটে হাইডির সাথে। নৌকো আমি কোনদিন বাইনি এর আগে। আর কায়াকি বেয়ে আমরা দুটো মেয়ে দুটো বাচ্চা নিয়ে সাগরে চলে গেলাম। অসাধারন ব্যপার আর কি!!!!


দুপুরের দিকে ফেরা শুরু হলো। ঘাটে এসে দেখি আমাদের নিতে যে বাস আসবার কথা সেটা কখন আসবে কেউ জানে না। আমারা সবাই লাগেজ নিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তার উপর টিপ টিপ বৃষ্টির ভেতর দাড়িয়ে বাসের অপেক্ষায়, কোন শেল্টার নেইযে দাড়াব। আবার শেল্টারের নিচে গেলে বাস মিস করার সম্ভবনা।
তিন ঘন্টা পরে বাস এলো। হানোই ফিরতে সন্ধে হলো। আবারও হোটাল খোজা শুরু করালাম কারন যে হোটেলে হালং বে যাবার আগে ছিলাম তাতে রুম নেই। যা হোক একটা হোটেল পাওয়া গেল। লাগেজ রেখে গেলাম ট্যুর কম্পানির কাছে টাকা ফেরত নিতে। টাকা ফেরত দিল আমাদের চিৎকার চেচামেচিতে। টিকেট কাটলাম "নিন বিন" যাবার জন্য পরের দিন। ডিনার করে রুমে ফিরে যথারিতী টায়ার্ড আর ঘুমে ঢলে পড়া "নিন বিনের" স্বপ্ন নিয়ে আর সুদিন/ সুসময়ের আশা নিয়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন