বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০১৪

ঘোরাফেরা নদী খালের বরিশালে

পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কীর্ত্তনখোলা নদীর পাড়ে বরিশাল। সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে বরিশালের গ্রামগঞ্জে বেড়াতে যেতে পারেন বছরের যেকোনো সময়। ঢাকা থেকে নৌ বা সড়কপথে বরিশাল যাওয়া এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা
নৌপথে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, হুলারহাটের পথে যাতায়াতব্যবস্থা আরামদায়ক। থাকা বা রাতযাপনের জন্য প্রত্যেক জেলা শহরেই সরকারিভাবে সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো, আবাসিক হোটেল ও কুয়াকাটায় পর্যটন করপোরেশনের মোটেল আছে।
বরিশালের ওপর দিয়ে মেঘনা, তেঁতুলিয়া, সন্ধ্যা, বিশখালী, আড়িয়াল খাঁ, বলেশ্বর, সুগন্ধা নদী বয়ে গেছে। কির্ত্তনখোলা নদীর পাড়ের সুন্দর শহর বরিশাল। পড়ন্ত বিকালে কির্ত্তনখোলায় নৌবিহারে যেতে পারেন। বরিশাল শহর ঘুরে বেড়াতে পারেন হেঁটে কিংবা রিকশায় চড়ে। শহরেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শহরের মাঝখানে বিবির পুকুর, জিলা স্কুলের পাশে পরেশ সাগর, অশ্বিনীকুমার টাউন হল, নতুল্লাবাদে চারণ কবি মুকুন্দ দাসের কালী মন্দির, হাসপাতাল রোডে শংকর মঠ, অক্সফোর্ড মিশন গির্জা, বেলপার্ক, লিচুশাহ (র.)-র মাজার।
Barisal
বরিশাল শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মাধবপাশার দুর্গাসাগর দীঘি। এখান থেকে কাছেই চাখারে শেরেবাংলার গ্রামের বাড়ি ও জাদুঘর। জাদুঘরে শেরেবাংলার ব্যবহূত আসবাব, পোশাক ইত্যাদি দেখতে পাবেন। উজিরপুর উপজেলায় গুটিয়ার টাঙ্গুরিয়া গ্রামে অপূর্ব স্থাপনায় তৈরি বায়তুল
আমান জামে মসজিদ ও ঈদগা ময়দান। বরিশাল-মাওয়া সড়কে দোয়ারিকা-শিকারপুর নদীতে সেতু। কির্ত্তনখোলার অন্য পাড়ে লামছড়ি গ্রামে দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরের বাড়ি ও লাইব্রেরি। কির্ত্তনখোলা সেতু পার হয়ে সড়ক চলে গেছে পটুয়াখালী, বরগুনা, কুয়াকাটা আবার ভোলার দিকে।
পনেরো শতকের শেষের দিকে নির্মিত গৌরনদীর কসবায় আল্লার মসজিদ। নয় গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের চারদিকে গোলাকৃতির মিনার দেখতে পাবেন। মসজিদের উত্তর দিকে হযরত দূত মল্লিকের মাজার।
লোহালিয়া নদীর কাছে পটুয়াখালী। পটুয়াখালী সুন্দর শহর। বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী জেলা। সাগরকন্যা পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত কুয়াকাটা বিশ্বের বিরল সমুদ্রসৈকতগুলোর অন্যতম। এখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন। রাখাইন সম্প্রদায় এ এলাকার আদি বাসিন্দা। এখানে রাখাইনদের প্যাগোডা (বৌদ্ধ মন্দির) ও ব্রোঞ্জের বুদ্ধমূর্তি আছে। কিছু দিন আগে এখান থেকে বণিক চাঁদ সওদাগরের কথিত হাজার বছরের পুরনো নৌকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ২০০ বছরের পুরনো একটা কুয়া রয়েছে। পর্যটকদের জন্য এটি একটি সুন্দর সমুদ্রসৈকত।
পটুয়াখালীর উল্লেখযোগ্য প্রাচীন কীর্তি মির্জাগঞ্জের মজিদবাড়ীয়ার মসজিদ। এ মসজিদ দিল্লির ফিরোজ শাহী স্থাপত্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। বাউফলের কালাইয়া বন্দরে কমলা রানীর দীঘি রয়েছে। বাকলা ও চন্দ্রদ্বীপের রাজা কৃষ্ণ বল্লভের রানী কমলা দেবী এ বিশাল দীঘিটি খনন করান।
পটুয়াখালীর দুমকিতে রয়েছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সাগড়পাড়ে পটুয়াখালী জেলার খেপুপাড়া স্বাস্থ্যকর স্থান। এখানে কিছুদিন আগে এশিয়ার বৃহত্তম বীজ গবেষণাগারের উদ্বোবন করা হয়। এছাড়া বরগুনা জেলার পাথরঘাাটা একটি প্রসিদ্ধ স্থান। ভোলা একটি দ্বীপ জেলা। চারদিক চর এলাকা। ভোলা থেকে লঞ্চে বা ট্রলারে চর মোনতাজ, চর কুকরি মুকরি, ঢালিচর, চর নিজাম ও সাকুটিয়ায় যাওয়া যায়। ভোলার মনপুরা উল্লোখযোগ্য পর্যটন এলাকা।
এসব চরে অসংখ্য মহিষের পাল দেখতে পাবেন। মহিষের দুধ ও দই এখানে খুব বিখ্যাত। ভোলা জেলার ওপর দিয়ে মেঘনা, তেঁতুলিয়া, শাহবাজপুর ও বোয়ালিয়া নদী রয়ে গেছে। ভোলা শহরে অনেক পুরনো বাড়িঘর ও উপাসনালয় রয়েছে। পিরোজপুরের রাবেয়কাঠিতে বারো ভূঁইয়াদের আমলের রাজা রুদ্র নারায়ণ রায়ের রাজবাড়ী। স্বরূপকাঠিতে নারকেল, সুপারি, পেয়ারার বাগান রয়েছে। সুন্দরবন এখান থেকে কাছে। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ধানসিড়ি নদী ঝালকাঠির গাবখানের বাঁকে অবস্থিত। গাবখান নদীতে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
গাবখান বাংলাদেশর একটি অন্যতম নামকরা চ্যানেল। এছাড়া সুগন্ধা ও বিশখালী নদী বয়ে গেছে ঝালকাঠি জেলার ওপর দিয়ে। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ কীর্তিপাশার জমিদারবাড়ি। ঝালকাঠি গামছার জন্যও বিখ্যাত। এ শহরে সিটি পার্কে ঘুরে মুগ্ধ হবেন।
SOURCE LINK 

1 টি মন্তব্য:

  1. খুবই সুন্দর তত্থবহুল পোষ্ট! বরিশাল ভ্রমণের আরও কিছু মজার তথ্য দেখে নিতে পারেন http://bit.ly/2asIVZE

    উত্তরমুছুন