এয়ারবিএনবি এপের যাত্রা শুরু হবার
পর থেকেই ভাবছিলাম এটা ট্রাই করে দেখা দরকার। পিয়ার-টু-পিয়ার হাউস শেয়ারিং
আইডিয়া হিসেবে খারাপ না কিন্তু বাস্তবে সেটা কতটুক কাজে দিবে সেটা নিয়ে
সন্দেহ দূর করার জন্যই বুকিং দিয়ে ফেললাম ডেনভার, কলোরাডো তে একটা ওয়ান
বেডরূম শেয়ারড এপার্টমেন্ট। আমার হোস্টের রিভিউ মোটে তিনটা সেটা নিয়ে যতটুক
টেনশন ছিলো সেটা তার বাসায় ঢুকেই দূর হয়ে গেলো। এক কথায়, এক্সিলেন্টে! বেশ
অমায়িক ব্যবহার ভদ্রলোকের। যে কয়দিন থেকেছি নিজের বাসা মনে করেই ছিলাম।
এখন ভাবছি নেক্সট যে কোনো ডেস্টিনেশনে হোটেল বুকিং করার আগে এয়ারবিএনবি চেক
করতে হবে।
কলোরাডো যাবার এই প্ল্যন গত কয়েক বছর ধরেই করছি.. তবে এইবার নেব্র্যস্কা মুভ করার পর আর দেরী করলাম না। ৪র্থ জুলাইয়ের ছুটির কারণে আমার নতুন বাসায় ইন্টারনেট আসতে লাগবে এক সপ্তাহ আর এটাই মোক্ষম সুযোগ ঘুরতে যাবার। ১২ ঘণ্টার ড্রাইভ শেষে টেক্সাস থেকে নেব্রাস্কা আসার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বের হলাম পাশের স্টেইট ডেনভারের উদ্দেশ্যে। এই ৬ ঘণ্টা জার্ণির লক্ষ্য একটাই হারিয়ে যাওয়া রকি পাহাড়ের পদদেশে।

wondering in 15th st mall
কলোরাডো গিয়েই রাতের ডেনভার দেখার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। আর প্রথমেই অবাক হলাম সাইক্লিস্টের সংখ্যা দেখে। বুঝতে পারলাম কেনো এই সিটি এমেরিকার হেলথিয়েস্ট সিটি গুলোর মধ্যে একটি। এইরকম পাহাড়ী রাস্তার মধ্যে নিতান্তই সাস্থ্য নিয়ে কন্সার্ণড না হলে কারো সাইকেল চালানোর কথা না। সাইক্লিস্টের পাশাপাশী ডাউনটাউনে এই ছুটির মধ্যেও পথচারীরও কমতি নেই। আরেকদল মানুষ দেখি রিকশায় চড়ে দিব্যি বাতাস খাচ্ছে। স্ট্রিট শপিং মলে পিপল ওয়াচ করতে করতে কখন যে রাত বারোটা বেজে গেছে খবরই নেই।
ফ্লোরিডা, টেক্সাস থেকে এক লাফে মিডওয়েস্টে এসে লক্ষ্য করলাম ডাইভার্সিটি নেই বললেই চলে। সেই হিসেবে একটু বেশীই সেইফ ফিল করে মনের ভুলে ওয়ালেট ফেলে রেখে আসলাম!
সকালে নতুন উদ্যেমে বের হলাম ডেনভার বোট্যনিকেল গার্ডেনের উদ্দেশ্যে.. আর সেখানেই

গ্লাসে ঢাকা এই এরিয়ার লাইটিং দারূণ ছিলো
গন্ধ ওয়ালা ফুল এমেরিকাতে বেশ রেয়ার তবে এটার গন্ধ ছিলো
রেড ভেলভেট
বেশ অর্গানাইজড এবং রিসোর্সফুল একটা গার্ডেন ছিলো এটা। ভিতরে কিছু টুকিটাকি আর্টিস্টিক ওয়ার্কও ছিলো। কলোরাডে হর্স রাইডিং এর জন্য ফেমাস তাই শুকনো গাছ দিয়ে তৈরী করা ঘোড়া চোখে পড়ে প্রবেশ পথেই। এছাড়াও আগের দিনের ঘোড়সাওয়ারদের ব্যবহৃত কিছু জিনিশ পত্রও ছিলো শোপিস হিসেবে। দিনের বেশীর ভাগ সময়ই গাছে ঢাকা গার্ডেনে প্রটেক্টেড থাকার কারণে রোদের তাপ সম্পর্কে আইডিয়া ছিলো না কোনো। সেটা বের হয়ে টের পেলাম.. কিন্তু থেমে থাকার সময় তো নেই..
ডেনভারের টপ আকর্ষণের মধ্যে রেডরক পাহাড় হচ্ছে একটা। এবং সেখানে গিয়ে বুঝলাম কি কারণ এতো গুলা ৫ স্টার রেটিং এর। ১৬০ মিলিয়ন বছর আগে ন্যচরালী তৈরী হওয়া অগ্নি বর্ণের এই মনোলিথের ব্রেথ-টেকিং-ভিউ দেখে আমি প্রায় ভুলেই গেছিলাম এলিভেশন সিকনেসের কথা। সেটা কিছুটা টের পেলাম হাইকিং শুরু করার পর বিশেষ করে যখন মনে পড়লো আমি এখন সমুদ্র থেকে ৭ হাজার ফিট উপরে আছি।
পাহাড়ের উপর আরো একটু উঠেই চোখে পড়লো বিশাল এক গ্রুপ যাদের প্রায় সবাই দীর্ঘকেশী মেটাল প্রেমী। প্রাকৃতিক এই বিশাল সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। ব্লুস ট্রাভেলারের সাইকেডেলিক রক কন্সার্টে যাবার শত ইচ্ছা থাকলেও ঐ মূহুর্তে হাতে টিকেট না থাকায় আর কিছু করার ছিলো না।
এ পথ ধরেই যেতে হয় এমেরিকার বেস্ট এমফিথিয়েটারে যেটা একসময় সেভেন ওয়ান্ডার্সের মধ্যে ছিলো
হাইকিং ট্রেইল থেকে মনোলিথের ভিউ
রেডরকের বিশালতার সাথে এক্সট্রা থ্রিল উপভোগ করতে হলে দেখতে হবে ডাইনোসরের পদচিহ্ন। পাথরের গায়ে খোদাই করা এইসব পায়ের ছাপ আর ডাইনোসোরের ফসিলের আকৃতি দেখতেই অন্যরকম লাগে। বিশ্বাস হয়না যে এই এলাকা একসময় ডাইনোসরের পদচারনায় মুখর ছিলো, আর সেখানে আমরা আজ কনসার্ট করছি। ভাবাই যায় না যে ১০০ মিলিয়ন বছর পর এই একই পাথরের কোলে কোন ধরনের প্রাণী রাজত্ব করবে।
এত বিউটির মধ্যে মুন কেন বাদ থাকবে?
স্বাভাবিক ভাবেই রেডরকের চূড়ায় উঠার পর প্রচন্ড ক্লান্তি লাগা শুরু করলো। প্রায় কয়েক বছর পর এইরকম ইন্টেন্সিভ হাইকিং হার্টের উপর কি পরিমাণ চাপ ফেলেছে এটা বুঝতে বাকি রইলো না। আর এদিকে বৃষ্টি নামছে। আমার আল্ট্রা-ওয়াইড-ল্যন্স ওয়েদার প্রটেক্টেড না হওয়ায় ছবি তোলায় একটু ব্যঘাত ঘটলো তারপরেও টুকটাক যা পারলাম তুলে ফেললাম।
লুকিং ডাউন টু মনোলিথ
উঠার পথে সিঁড়ি দিয়ে হরিণ দেখা যায়। বেশ সামনে আসে হরিণ গুলো আবার সাহস করে। তবে আমার কাছে যুম লেন্স না থাকায় হরিণের ছবি তুলে সুবিধা করতে পারলাম না। একটু আগে এখানে আসার কথা ভেবে ল্যন্ডস্কেইপ তোলার জন্য ক্যমেরা স্টোরে গিয়ে ৯-১৮ মি.মি এর পেছনে এক গাদা খরচ করে এখন যুম লেন্সের চিন্তা আপাতত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললাম। আর কেই বা জানতো ল্যন্ডস্কেইপের সাথে এখানে এত ধরনের পশু-পাখীর দেখা মিলবে!

অলমোস্ট পিকে পৌঁছে গেছি

ইয়েপ দ্যটস এ লট অফ মেঘ

নিচে তাকাতে একটু ভয় করে যদিও
পার্কিং এরিয়া
নিচে নেমে পার্কিং এরিয়াতে এসে খেয়াল করলাম লোকজন সবাই বিয়ার আর ম্যরিউয়ানা খাচ্ছে পাবলিকলি। তখন মনে পড়লো ঠিকই তো খাবে না কেন, এটা যে কলোরাডো। এমেরিকার প্রথম স্টেইট যেখানে লিগ্যলি এন্টারটেইনমেন্ট এর জন্য ম্যরিউয়ানা বিক্রি হয়। যেই ভাবা সেই কাজ। চলে এলাম ডাউনটাউনে কলোরাডোর স্যুভেনিয়র কিনতে

welcome to Colorado
দোকানে ঢুকেই আইডি দেখতে চাইলো একটা মেয়ে। বয়স আমার বয়সী এবং কাকতালীয় ভাবে তার জন্মদিন আর আমার জন্মদিন একই দিনে। সেই সুবাদে আমাকে আর কোনো প্রশ্ন না করেই ভেতরে ঢুকার পার্মিশন দিয়ে দিলো। আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে স্টোরের ভিতরে ঢুকে একটু টাশকি খেলাম। এত ধরনের এডিবল থাকবে সেটা আশা করি নাই। চকলেট থেকে শুরু করে কুকিয পর্যন্ত সব কিছুই ম্যরিউয়ানা ফ্লেভরে পাওয়া যাচ্ছে।
যদিও শপিং শেষে টাকা দিতে একটু সমস্যা হলো কারণ এরা ক্যশ/ডেবিট কার্ড ছাড়া
কিছু এক্সেপ্ট করে না। এবং ডেবিট কার্ডের ট্র্যন্সেকশনও এটিএম উইথড্রয়াল
হিসেবে ব্যংক স্টেইটমেন্টে আসবে। সিক্রেসির ব্যপারটা একটু জটিল হলেও পছন্দ
হলো। এই ধরণের কোনো কিছু লিগ্যল হলেও কিছু bells and whistles থেকেই যায়!
অসাধারণ এক ঘুমে রাত পার করে কলোরাডো তে আমার দ্বিতীয় দিন শুরু হলো বৃষ্টি দিয়ে। তুমুল বৃষ্টির মধ্যে গাড়ির ভেতরে থেকে করা যায় এমন কিছু করার কথা ভেবে একটা সিনিক রোডের উপর ড্রাইভ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। কলোরাডো তে সিনিক রোডের অভাব নেই। পাহাড়ের কোল ঘেষে ২০০-২৫০ মাইল দীর্ঘ রোডও এই স্টেইটে আছে। এবং খুব ভালো ভাবে মেইনটেইন করা এই রোড গুলো। তাই সামারে ড্রাইভ করা খুব সেইফ। তবে ১৪ হাজার ফিট উপরে উঠলে সেটা আর সামার থাকে না। তখন সারা বছরই শীত। আমি আসার দুই দিন আগেও সেখানে স্নো পড়েছে।
সময় নিয়ে ড্রাইভ করা লাগলো রাস্তা পিচ্ছিল থাকার কারণে। একটু এদিক থেকে সেদিক হলেই একবারে নিচে! এবং এমেরিকার সবচেয়ে উঁচু রাস্তা থেকে পড়ার এক্সপিরিয়েন্স খুব একটা ভালো হবার কথা না। এইসব ভাবতে ভাবতেই কোন ফাঁকে যে উপরে চলে এসেছি টেরও পেলাম না। মেঘের ভেতর দিয়ে ড্রাইভ করে উপরে উঠার মজাই আলাদা। মাউন্ট ইভান্স লেইক থেকে পাহাড়ের ভিউ সত্যিই বর্ণনা করার মতো না। করতে গেলেও খাটো করা হবে এই সৌন্দর্যকে।
মাউন্ট ইভ্যন্স লেইক
আমার ড্যশক্যম না থাকায় & এক হাতে ড্রাইভিং আরেক হাতে ক্যমেরা অপারেটিং অতিরিক্ত রিস্কি মনে হওয়ায় আমি ছবি তুলতে পারিনি ড্রাইভ করার সময়। এবং তুমুল বৃষ্টির কারণে যতগুলা জায়গায় থেমেছি বের হয়ে হেঁটে নিজের চোখ জুড়ানো লেগেছে ক্যমেরার চোখ জুড়ানো আর সম্ভব হয়নি। তবে ফ্লিকারের সৌজন্যে কিছু ছবি এখানে শেয়ার করলাম..
by Kent Kanouse, on Flickr

Motoring the Mount Evans Scenic Byway
by Kent Kanouse, on Flickr

কলোরাডো যাবার এই প্ল্যন গত কয়েক বছর ধরেই করছি.. তবে এইবার নেব্র্যস্কা মুভ করার পর আর দেরী করলাম না। ৪র্থ জুলাইয়ের ছুটির কারণে আমার নতুন বাসায় ইন্টারনেট আসতে লাগবে এক সপ্তাহ আর এটাই মোক্ষম সুযোগ ঘুরতে যাবার। ১২ ঘণ্টার ড্রাইভ শেষে টেক্সাস থেকে নেব্রাস্কা আসার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বের হলাম পাশের স্টেইট ডেনভারের উদ্দেশ্যে। এই ৬ ঘণ্টা জার্ণির লক্ষ্য একটাই হারিয়ে যাওয়া রকি পাহাড়ের পদদেশে।

wondering in 15th st mall
কলোরাডো গিয়েই রাতের ডেনভার দেখার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। আর প্রথমেই অবাক হলাম সাইক্লিস্টের সংখ্যা দেখে। বুঝতে পারলাম কেনো এই সিটি এমেরিকার হেলথিয়েস্ট সিটি গুলোর মধ্যে একটি। এইরকম পাহাড়ী রাস্তার মধ্যে নিতান্তই সাস্থ্য নিয়ে কন্সার্ণড না হলে কারো সাইকেল চালানোর কথা না। সাইক্লিস্টের পাশাপাশী ডাউনটাউনে এই ছুটির মধ্যেও পথচারীরও কমতি নেই। আরেকদল মানুষ দেখি রিকশায় চড়ে দিব্যি বাতাস খাচ্ছে। স্ট্রিট শপিং মলে পিপল ওয়াচ করতে করতে কখন যে রাত বারোটা বেজে গেছে খবরই নেই।
ফ্লোরিডা, টেক্সাস থেকে এক লাফে মিডওয়েস্টে এসে লক্ষ্য করলাম ডাইভার্সিটি নেই বললেই চলে। সেই হিসেবে একটু বেশীই সেইফ ফিল করে মনের ভুলে ওয়ালেট ফেলে রেখে আসলাম!

সকালে নতুন উদ্যেমে বের হলাম ডেনভার বোট্যনিকেল গার্ডেনের উদ্দেশ্যে.. আর সেখানেই

গ্লাসে ঢাকা এই এরিয়ার লাইটিং দারূণ ছিলো

গন্ধ ওয়ালা ফুল এমেরিকাতে বেশ রেয়ার তবে এটার গন্ধ ছিলো

রেড ভেলভেট
বেশ অর্গানাইজড এবং রিসোর্সফুল একটা গার্ডেন ছিলো এটা। ভিতরে কিছু টুকিটাকি আর্টিস্টিক ওয়ার্কও ছিলো। কলোরাডে হর্স রাইডিং এর জন্য ফেমাস তাই শুকনো গাছ দিয়ে তৈরী করা ঘোড়া চোখে পড়ে প্রবেশ পথেই। এছাড়াও আগের দিনের ঘোড়সাওয়ারদের ব্যবহৃত কিছু জিনিশ পত্রও ছিলো শোপিস হিসেবে। দিনের বেশীর ভাগ সময়ই গাছে ঢাকা গার্ডেনে প্রটেক্টেড থাকার কারণে রোদের তাপ সম্পর্কে আইডিয়া ছিলো না কোনো। সেটা বের হয়ে টের পেলাম.. কিন্তু থেমে থাকার সময় তো নেই..
ডেনভারের টপ আকর্ষণের মধ্যে রেডরক পাহাড় হচ্ছে একটা। এবং সেখানে গিয়ে বুঝলাম কি কারণ এতো গুলা ৫ স্টার রেটিং এর। ১৬০ মিলিয়ন বছর আগে ন্যচরালী তৈরী হওয়া অগ্নি বর্ণের এই মনোলিথের ব্রেথ-টেকিং-ভিউ দেখে আমি প্রায় ভুলেই গেছিলাম এলিভেশন সিকনেসের কথা। সেটা কিছুটা টের পেলাম হাইকিং শুরু করার পর বিশেষ করে যখন মনে পড়লো আমি এখন সমুদ্র থেকে ৭ হাজার ফিট উপরে আছি।

পাহাড়ের উপর আরো একটু উঠেই চোখে পড়লো বিশাল এক গ্রুপ যাদের প্রায় সবাই দীর্ঘকেশী মেটাল প্রেমী। প্রাকৃতিক এই বিশাল সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। ব্লুস ট্রাভেলারের সাইকেডেলিক রক কন্সার্টে যাবার শত ইচ্ছা থাকলেও ঐ মূহুর্তে হাতে টিকেট না থাকায় আর কিছু করার ছিলো না।

এ পথ ধরেই যেতে হয় এমেরিকার বেস্ট এমফিথিয়েটারে যেটা একসময় সেভেন ওয়ান্ডার্সের মধ্যে ছিলো

হাইকিং ট্রেইল থেকে মনোলিথের ভিউ
রেডরকের বিশালতার সাথে এক্সট্রা থ্রিল উপভোগ করতে হলে দেখতে হবে ডাইনোসরের পদচিহ্ন। পাথরের গায়ে খোদাই করা এইসব পায়ের ছাপ আর ডাইনোসোরের ফসিলের আকৃতি দেখতেই অন্যরকম লাগে। বিশ্বাস হয়না যে এই এলাকা একসময় ডাইনোসরের পদচারনায় মুখর ছিলো, আর সেখানে আমরা আজ কনসার্ট করছি। ভাবাই যায় না যে ১০০ মিলিয়ন বছর পর এই একই পাথরের কোলে কোন ধরনের প্রাণী রাজত্ব করবে।

এত বিউটির মধ্যে মুন কেন বাদ থাকবে?
স্বাভাবিক ভাবেই রেডরকের চূড়ায় উঠার পর প্রচন্ড ক্লান্তি লাগা শুরু করলো। প্রায় কয়েক বছর পর এইরকম ইন্টেন্সিভ হাইকিং হার্টের উপর কি পরিমাণ চাপ ফেলেছে এটা বুঝতে বাকি রইলো না। আর এদিকে বৃষ্টি নামছে। আমার আল্ট্রা-ওয়াইড-ল্যন্স ওয়েদার প্রটেক্টেড না হওয়ায় ছবি তোলায় একটু ব্যঘাত ঘটলো তারপরেও টুকটাক যা পারলাম তুলে ফেললাম।

লুকিং ডাউন টু মনোলিথ
উঠার পথে সিঁড়ি দিয়ে হরিণ দেখা যায়। বেশ সামনে আসে হরিণ গুলো আবার সাহস করে। তবে আমার কাছে যুম লেন্স না থাকায় হরিণের ছবি তুলে সুবিধা করতে পারলাম না। একটু আগে এখানে আসার কথা ভেবে ল্যন্ডস্কেইপ তোলার জন্য ক্যমেরা স্টোরে গিয়ে ৯-১৮ মি.মি এর পেছনে এক গাদা খরচ করে এখন যুম লেন্সের চিন্তা আপাতত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললাম। আর কেই বা জানতো ল্যন্ডস্কেইপের সাথে এখানে এত ধরনের পশু-পাখীর দেখা মিলবে!

অলমোস্ট পিকে পৌঁছে গেছি

ইয়েপ দ্যটস এ লট অফ মেঘ

নিচে তাকাতে একটু ভয় করে যদিও

পার্কিং এরিয়া
নিচে নেমে পার্কিং এরিয়াতে এসে খেয়াল করলাম লোকজন সবাই বিয়ার আর ম্যরিউয়ানা খাচ্ছে পাবলিকলি। তখন মনে পড়লো ঠিকই তো খাবে না কেন, এটা যে কলোরাডো। এমেরিকার প্রথম স্টেইট যেখানে লিগ্যলি এন্টারটেইনমেন্ট এর জন্য ম্যরিউয়ানা বিক্রি হয়। যেই ভাবা সেই কাজ। চলে এলাম ডাউনটাউনে কলোরাডোর স্যুভেনিয়র কিনতে


welcome to Colorado

দোকানে ঢুকেই আইডি দেখতে চাইলো একটা মেয়ে। বয়স আমার বয়সী এবং কাকতালীয় ভাবে তার জন্মদিন আর আমার জন্মদিন একই দিনে। সেই সুবাদে আমাকে আর কোনো প্রশ্ন না করেই ভেতরে ঢুকার পার্মিশন দিয়ে দিলো। আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে স্টোরের ভিতরে ঢুকে একটু টাশকি খেলাম। এত ধরনের এডিবল থাকবে সেটা আশা করি নাই। চকলেট থেকে শুরু করে কুকিয পর্যন্ত সব কিছুই ম্যরিউয়ানা ফ্লেভরে পাওয়া যাচ্ছে।

অসাধারণ এক ঘুমে রাত পার করে কলোরাডো তে আমার দ্বিতীয় দিন শুরু হলো বৃষ্টি দিয়ে। তুমুল বৃষ্টির মধ্যে গাড়ির ভেতরে থেকে করা যায় এমন কিছু করার কথা ভেবে একটা সিনিক রোডের উপর ড্রাইভ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। কলোরাডো তে সিনিক রোডের অভাব নেই। পাহাড়ের কোল ঘেষে ২০০-২৫০ মাইল দীর্ঘ রোডও এই স্টেইটে আছে। এবং খুব ভালো ভাবে মেইনটেইন করা এই রোড গুলো। তাই সামারে ড্রাইভ করা খুব সেইফ। তবে ১৪ হাজার ফিট উপরে উঠলে সেটা আর সামার থাকে না। তখন সারা বছরই শীত। আমি আসার দুই দিন আগেও সেখানে স্নো পড়েছে।
সময় নিয়ে ড্রাইভ করা লাগলো রাস্তা পিচ্ছিল থাকার কারণে। একটু এদিক থেকে সেদিক হলেই একবারে নিচে! এবং এমেরিকার সবচেয়ে উঁচু রাস্তা থেকে পড়ার এক্সপিরিয়েন্স খুব একটা ভালো হবার কথা না। এইসব ভাবতে ভাবতেই কোন ফাঁকে যে উপরে চলে এসেছি টেরও পেলাম না। মেঘের ভেতর দিয়ে ড্রাইভ করে উপরে উঠার মজাই আলাদা। মাউন্ট ইভান্স লেইক থেকে পাহাড়ের ভিউ সত্যিই বর্ণনা করার মতো না। করতে গেলেও খাটো করা হবে এই সৌন্দর্যকে।

মাউন্ট ইভ্যন্স লেইক
আমার ড্যশক্যম না থাকায় & এক হাতে ড্রাইভিং আরেক হাতে ক্যমেরা অপারেটিং অতিরিক্ত রিস্কি মনে হওয়ায় আমি ছবি তুলতে পারিনি ড্রাইভ করার সময়। এবং তুমুল বৃষ্টির কারণে যতগুলা জায়গায় থেমেছি বের হয়ে হেঁটে নিজের চোখ জুড়ানো লেগেছে ক্যমেরার চোখ জুড়ানো আর সম্ভব হয়নি। তবে ফ্লিকারের সৌজন্যে কিছু ছবি এখানে শেয়ার করলাম..

by Kent Kanouse, on Flickr

Motoring the Mount Evans Scenic Byway
by Kent Kanouse, on Flickr

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন