পৃথিবীর অন্যতম নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত দেশ ভারত মহাসাগরের
দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ। হাজারের বেশি টুকরো টুকরো দ্বীপ মিলেয়ে ছোট্ট এই
দেশ। নীল সাগর, সমুদ্র সৈকত, অসংখ্য দ্বীপ আর জলের নিচের প্রবাল
বাগান-সবকিছু মিলে মালদ্বীপ কিন্তু রোমান্টিক জায়গা হিসেবে দারুণ। দেশটির
হৃদয়কাড়া সৌন্দর্যের কথা বলে শেষ হবে না, প্রিয়জনের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে
চোখ জুড়াতে পারেন মালদ্বীপের সৌন্দর্যে।
প্রতি বছর বিশ্বের নানা প্রান্তর থেকে লাখ লাখ পর্যটক মালদ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন। এক ঋতুর দেশটির উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম মিলে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ছোট ছোট দ্বীপ। এ দ্বীপগুলোর সমন্বয়েই সৃষ্টি মালদ্বীপ।

মালদ্বীপের বর্তমান জনসংখ্যা তিন লাখের কিছু বেশি। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে রয়েছে অত্যাধুনিক মালে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। মালদ্বীপের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কল্যাণে পর্যটকরা অনায়াসে ছুটে বেড়াতে পারেন এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে। পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র মালদ্বীপেই বিশালকায় সাবমেরিনে করে সমুদ্রর তলদেশে ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। যা পর্যটকদের ১২০ ফুট গভীর সমুদ্রর তলদেশ পর্যন্ত নিয়ে যায়। গভীর সমুদ্রর তলদেশে বিশাল বিশাল মাছ, গাছ-গাছালি, ভয়ংকর প্রাণী, উঁচু-নিচু পাহাড় দেখে মুগ্ধ হন পর্যটকরা। সমুদ্রর তলদেশে ভ্রমণ এতই রোমাঞ্চকর যে, বারবার ফিরে আসতে ইচ্ছে করে মালদ্বীপে। সমুদ্র উপকূলের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য রয়েছে সাফারিবোট। যা উপকূল থেকে পর্যটকদের নিয়ে যায় গভীর সমুদ্রে। সৌন্দর্য পিপাসুদের দেয় অনাবিল আনন্দ।
এক একটি সাফারিবোট ১৫-২০ দিনের জন্য ২০-২৫ জন পর্যটক নিয়ে পাড়ি জমায় গভীর সমুদ্র ভ্রমণের পথে। সাফারিবোটে ভ্রমণের অংশ হিসেবে পর্যটকরা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত গাইড, অক্সিজেন, ওয়াটার প্রুফ জ্যাকেট নিয়ে পাড়ি জমায় অজানার উদ্দেশ্যে। পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য মালদ্বীপে রয়েছে প্রায় ২০০র বেশি সাফারিবোট। মালদ্বীপের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ইউরোপের দেশগুলো থেকে আসছে হাজার হাজার পর্যটক। এ কারণে শত শত হোটেল রিসোর্ট সব সময় থাকে মুখরিত। মালদ্বীপের আরেক বিস্ময় হল সমুদ্রের মাঝখানে স্কয়ার সাইজের কয়েক কিলোমিটার জায়গা। যেখানে নেই কোন সাগরের ঢেউ, মনে হয় পুকুরের পানির মতো নীরব হয়ে আছে। এই জায়গায় পর্যটকরা নির্ভয়ে সাঁতার কাটে। স্পিডবোটে চড়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।
এখানে দেখা মিলে বিরল প্রজাতির পানি কাটা পাখি। পর্যটকরা যখন রাজধানী মালে আসেন তখন প্রথমে তাদের মন কেড়ে নেয় একটি পার্ক। সেই পার্কে রয়েছে শত শত কবুতর। এই কবুতরের সঙ্গে পর্যটকরা মনে খুলে আনন্দ-উল্লাস করে।
এই তো কিছুদিন আগেও শুধু টাকা-পয়সাওয়ালা পর্যটকরাই সেখানে যেতে পারতেন। মালদ্বীপে পা রাখলেই গুনতে হতো মোটা অংকের ট্যাক্স। তবে দিন পাল্টেছে। বছর কয়েক আগে আইনে সংস্কার আনায় এখন কম খরচে সেখানে যাওয়া যাচ্ছে। তাই নয়নাভিরাম দ্বীপ দেশে ঘুরতে চাইলে বেরিয়ে পারেন প্রিয়জনদের নিয়ে।
সার্কের
অন্তর্ভুক্ত দেশ মালদ্বীপের আয়ের একটা বড় অংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। দ্বীপ
রাষ্ট্র হওয়ার কারণে পশ্চিমা পর্যটকদের কাছে মালদ্বীপ খুবই আকর্ষণীয়। বিশেষ
করে পশ্চিমা নবদম্পতিরা সেখানে যেতে খুব পছন্দ করেন।কিন্তু পশ্চিমা পর্যটক
মানেই তাদের বিশেষ কিছু সুবিধা দিতে হয়। যেমন অবাধে পানীয় পানের সুযোগ,
ইচ্ছামতো পোশাক আশাক পরা। কিন্তু এর কোনোটাই মুসলিম দেশ মালদ্বীপের
সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
আগে পর্যটকদের মনুষ্য বসতি আছে এমন কোনো জায়গায় যেতে দেয়া হতো না। রাজধানী মালের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর পর্যটকদের স্পিডবোটে বা এয়ার ট্যাক্সিতে করে বিভিন্ন দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হতো। সেসব দ্বীপে কোনো বসতি থাকত না। ফলে পর্যটকরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারতেন। তবে ২০০৯ সালে দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মোহাম্মদ নাশিদ একটি সংস্কার আনেন। এর ফলে মালেতে বসবাসকারীরা তাদের ‘গেস্টহাউস’ বিদেশি পর্যটকদের কাছে ভাড়া দেয়ার সুযোগ পান।
এতে করে যেটা হয়েছে তা হলো পর্যটকদের আর স্পিডবোট বা এয়ার ট্যাক্সির মতো ব্যয়বহুল যানে চড়তে হচ্ছে না। আর রাজধানীতে থাকতে পারার কারণে কম খরচে খাওয়া দাওয়ার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অথচ আগে এয়ার ট্যাক্সিতে করে যে দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হতো সেখানে মানুষজন না থাকায় খাবারের দাম হতো অনেক বেশি। এখানে প্রতি রাতের ভাড়া ৩০ ডলার।
দ্বীপগুলোতে যে রিসোর্ট রয়েছে সেখানে ভাড়াটা এর চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি! সুতরাং ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা সময় ও সুযোগ পেলে চলে যেতে পারেন মালদ্বীপে। মালদ্বীপের এয়ারলাইন্স ‘মালদিভিয়ান’ সপ্তাহে দু’দিন ঢাকা থেকে মালেতে চলাচল করে।
:: আবিদা আজাদ :: মার্চ ১৪, ২০১৪
প্রতি বছর বিশ্বের নানা প্রান্তর থেকে লাখ লাখ পর্যটক মালদ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন। এক ঋতুর দেশটির উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম মিলে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ছোট ছোট দ্বীপ। এ দ্বীপগুলোর সমন্বয়েই সৃষ্টি মালদ্বীপ।

মালদ্বীপের বর্তমান জনসংখ্যা তিন লাখের কিছু বেশি। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে রয়েছে অত্যাধুনিক মালে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। মালদ্বীপের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কল্যাণে পর্যটকরা অনায়াসে ছুটে বেড়াতে পারেন এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে। পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র মালদ্বীপেই বিশালকায় সাবমেরিনে করে সমুদ্রর তলদেশে ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। যা পর্যটকদের ১২০ ফুট গভীর সমুদ্রর তলদেশ পর্যন্ত নিয়ে যায়। গভীর সমুদ্রর তলদেশে বিশাল বিশাল মাছ, গাছ-গাছালি, ভয়ংকর প্রাণী, উঁচু-নিচু পাহাড় দেখে মুগ্ধ হন পর্যটকরা। সমুদ্রর তলদেশে ভ্রমণ এতই রোমাঞ্চকর যে, বারবার ফিরে আসতে ইচ্ছে করে মালদ্বীপে। সমুদ্র উপকূলের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য রয়েছে সাফারিবোট। যা উপকূল থেকে পর্যটকদের নিয়ে যায় গভীর সমুদ্রে। সৌন্দর্য পিপাসুদের দেয় অনাবিল আনন্দ।
এক একটি সাফারিবোট ১৫-২০ দিনের জন্য ২০-২৫ জন পর্যটক নিয়ে পাড়ি জমায় গভীর সমুদ্র ভ্রমণের পথে। সাফারিবোটে ভ্রমণের অংশ হিসেবে পর্যটকরা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত গাইড, অক্সিজেন, ওয়াটার প্রুফ জ্যাকেট নিয়ে পাড়ি জমায় অজানার উদ্দেশ্যে। পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য মালদ্বীপে রয়েছে প্রায় ২০০র বেশি সাফারিবোট। মালদ্বীপের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ইউরোপের দেশগুলো থেকে আসছে হাজার হাজার পর্যটক। এ কারণে শত শত হোটেল রিসোর্ট সব সময় থাকে মুখরিত। মালদ্বীপের আরেক বিস্ময় হল সমুদ্রের মাঝখানে স্কয়ার সাইজের কয়েক কিলোমিটার জায়গা। যেখানে নেই কোন সাগরের ঢেউ, মনে হয় পুকুরের পানির মতো নীরব হয়ে আছে। এই জায়গায় পর্যটকরা নির্ভয়ে সাঁতার কাটে। স্পিডবোটে চড়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।
এখানে দেখা মিলে বিরল প্রজাতির পানি কাটা পাখি। পর্যটকরা যখন রাজধানী মালে আসেন তখন প্রথমে তাদের মন কেড়ে নেয় একটি পার্ক। সেই পার্কে রয়েছে শত শত কবুতর। এই কবুতরের সঙ্গে পর্যটকরা মনে খুলে আনন্দ-উল্লাস করে।
এই তো কিছুদিন আগেও শুধু টাকা-পয়সাওয়ালা পর্যটকরাই সেখানে যেতে পারতেন। মালদ্বীপে পা রাখলেই গুনতে হতো মোটা অংকের ট্যাক্স। তবে দিন পাল্টেছে। বছর কয়েক আগে আইনে সংস্কার আনায় এখন কম খরচে সেখানে যাওয়া যাচ্ছে। তাই নয়নাভিরাম দ্বীপ দেশে ঘুরতে চাইলে বেরিয়ে পারেন প্রিয়জনদের নিয়ে।

আগে পর্যটকদের মনুষ্য বসতি আছে এমন কোনো জায়গায় যেতে দেয়া হতো না। রাজধানী মালের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর পর্যটকদের স্পিডবোটে বা এয়ার ট্যাক্সিতে করে বিভিন্ন দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হতো। সেসব দ্বীপে কোনো বসতি থাকত না। ফলে পর্যটকরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারতেন। তবে ২০০৯ সালে দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মোহাম্মদ নাশিদ একটি সংস্কার আনেন। এর ফলে মালেতে বসবাসকারীরা তাদের ‘গেস্টহাউস’ বিদেশি পর্যটকদের কাছে ভাড়া দেয়ার সুযোগ পান।
এতে করে যেটা হয়েছে তা হলো পর্যটকদের আর স্পিডবোট বা এয়ার ট্যাক্সির মতো ব্যয়বহুল যানে চড়তে হচ্ছে না। আর রাজধানীতে থাকতে পারার কারণে কম খরচে খাওয়া দাওয়ার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অথচ আগে এয়ার ট্যাক্সিতে করে যে দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হতো সেখানে মানুষজন না থাকায় খাবারের দাম হতো অনেক বেশি। এখানে প্রতি রাতের ভাড়া ৩০ ডলার।
দ্বীপগুলোতে যে রিসোর্ট রয়েছে সেখানে ভাড়াটা এর চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি! সুতরাং ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা সময় ও সুযোগ পেলে চলে যেতে পারেন মালদ্বীপে। মালদ্বীপের এয়ারলাইন্স ‘মালদিভিয়ান’ সপ্তাহে দু’দিন ঢাকা থেকে মালেতে চলাচল করে।
:: আবিদা আজাদ :: মার্চ ১৪, ২০১৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন