শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০১৪

ঘুরে দেখুন উড়িষ্যা প্রদেশ

Tuesday 8th of April 2014 10:00:11 AM
রাজধানী : ভুবনেশ্বর। জেলার সংখ্যা : ৩০। শহরের সংখ্যা : ১৩৮। গ্রামের সংখ্যা : ৪৭,৫২৯। জনসংখ্যা : ৪,১৯,৪৭,৩৫৮ (২০১১)। শিক্ষিতের হার : ৭৩.৪৫% (২০১১)।
বিমানবন্দর : ভুবনেশ্বর।  বন্দর : পারাদীপ, গোপালপুর।
জেলা শহরগুলো হলো : (১) মালকানগিরি (২) কোরাপুট (৩) রায়গড় (৪) নবরঙ্গপুর (৫) ছত্রপুর (৬) পারলাকিমিদি (৭) ভবানী পাটনা (৮) পুরী (৯) নয়াগড় (১০) খুরদা (১১) ভুবনেশ্বর (১২) জদৎসিংপুর (১৩) কটক (১৪) কেন্দ্রপাড়া (১৫) পানিকোইল (১৬) ভদ্রক (১৭) বালেশ্বর (১৮) বারিপদা (১৯) ঢেংকানল (২০) আঙ্গুল (২১) কেন্দু ঝারগড়  (২২) সুন্দরগড় (২৩) ঝাড়সুগুদা (২৪) সম্বলপুর (২৫) বারগড় (২৬) নুয়াপাড়া (২৭) বোলাঙ্গির (২৮) ফুলবনি (২৯) বৌধ (৩০) সোনপুর।

সাতকোশিয়া : নদীর দুপাশ থেকে উঠে যাওয়া পাহাড় আর পাহাড়ের মধ্য দিয়ে মহানদীর বয়ে চলার পথ, আর পথের একদিকে বিস্তীর্ণ বালুচরে সারি সারি রং-বেরঙের তাঁবু এই হলো সাতকোশিয়া গর্জের টিকরপাড়া নেচার ক্যাম্প। পাহাড়ের আড়াল দিয়ে মহানদী সাত ক্রোশ পথ পাড়ি দিয়ে চলেছে, তাই এর নাম সাতকোশিয়া গর্জ অভয়ারণ্য। ৮০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এই জঙ্গল সিমলিপালের পর উড়িষ্যার দ্বিতীয় টাইগার রিজার্ভ। মহানদীর চরে সার সার তাঁবু আর তার থেকে ১৫০ মিটারের মধ্যে কুমির আর ঘড়িয়ালের রোদ পোহানোর দৃশ্য। টিকরপাড়া নেচার ক্যাম্প থেকেই আপনি বেড়িয়ে নিতে পারেন লবঙ্গির জঙ্গল, পুরানাকোট, বাঘমুণ্ডা প্রভৃতি নজরমিনার। প্রত্যেকটি জায়গাতেই থাকার বাংলো আছে। গোটা ক্যাম্পজুড়ে সব সময় মৃদুমন্দ হাওয়া এবং তার সঙ্গে তালমিলিয়ে অজস্র পাখির কূজন। সকালবেলা পাহাড়ের ওপর থেকে মহানদীর জলের ওপর সূর্যকিরণ এবং উপত্যকাজুড়ে কুয়াশা ও সূর্যের আলোর খেলা দেখতে বেশ ভালো লাগে। ক্যাম্পের ছেলেরাই আপনাকে সকালবেলা দেড় কিলোমিটার হেঁটে জঙ্গল ভ্রমণে নিয়ে যাবে, যাওয়ার পথেই দেখতে পাবেন মালাবার জায়েন্ট স্কুইর‌্যাল, ওরিয়েন্টাল ব্লু ম্যাগপাই বা প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচার। বোটিং করতে করতে দেখতে পাবেন কুমিরের অলস রোদ পোহানো, পাথরের ওপর ক”ছপের চুপচাপ বসে থাকা, অসংখ্য মাছরাঙা পাখি, আর রাডি শেলডাকের কর্কশ ডাক। সন্ধেবেলা যখন জেলেরা ডিঙিনৌকা নিয়ে বাড়ি ফেরার তোড়জোড় করবে, আপনিও তখন ক্যাম্পে ফিরে তৈরি হয়ে নিন ক্যাম্পফায়ারের জন্য। যখন পশ্চিম দিকের পাহাড়ে সূর্যাস্তের আলো পড়বে তখন দেখবেন কোথাও হলুদ, কোথাও কমলা বা লাল রঙের আভা। ক্যাম্পের একশো মিটারের মধ্যে মহানদীর নীল জল, কিন্তু ভুলেও জলে পা দেবেন না। মহানদীতে প্রচুর কুমির। পায়ে হেঁটে দেখে নিন ঘড়িয়াল রিসার্চ সেন্টার। মনে রাখবেন, টিকরপাড়ার দশ কিলোমিটার আগে থেকে কোনো মোবাইল কাজ করে না।

কীভাবে যাবেন : হাওড়া থেকে কটক। কটক স্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে বাদামবাড়ি বাসস্ট্যান্ড। বাদামবাড়ি থেকে বাসে আঙ্গুল। দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। আঙ্গুল থেকে টিকরপাড়া ৬০ কিলোমিটার। দলে ভারী হলে কটক থেকে গাড়ি ভাড়া করে আঙ্গুল আসা যায়। ভাড়া ১,৮০০ থেকে ২,০০০ টাকা পড়বে। আঙ্গুল থেকে গাড়ি নিয়ে টিকরপাড়া। গাড়ির জন্য ফোন করুন : নবকিশোর : ০৯৪৩৯০-১৫০৬৬, রঞ্জন : ৯৪৩৭২-১৩৬২৪।

কোথায় থাকবেন : সাতকোশিয়া গর্জ অভয়ারণ্যে অনেকগুলো বনবাংলো আছে। যদিও বনবাংলোগুলো বেশ ভালো, তবে সব বনবাংলোতে সব সুবিধে নেই। টিকরপাড়া নেচার ক্যাম্প নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত খোলা থাকে। ক্যাম্পের ভাড়া ১,৫০০ টাকা। এর মধ্যে দুজনের থাকা, খাওয়া, ক্যাম্পফায়ার, বোটিং, জঙ্গল ট্রেক সব খরচ ধরা থাকে। অতিরিক্ত একজনের জন্য ৫০০ টাকা অতিরিক্ত।

বনবাংলো ও ক্যাম্প বুকিংয়ের জন্য চিঠি লিখুন :
ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার, সাতকোশিয়া ওয়াইল্ডলাইফ ডিভিশন
আঙ্গুল, হাকিমপাড়া, পিন-৭৫৯১৪৩, উড়িষ্যা। ০৬৭৬৪-২৩৬২১৮ (অফিস) এছাড়া অনলাইন বুকিং করতে পারেন :
www.satkosia.org-তে। টিকরপাড়া নেচার ক্যাম্পের ম্যানেজার রাজু চৌহানের ফোন নম্বর : ০৯৪৩৯-৮২০৭২৭, ০৮৮৯৫-৭৮২৩১১।


পুরী
উত্তাল সমুদ্র, সুন্দরী বেলাভূমি এবং জগন্নাথদেব দর্শনের জন্য অগণিত মানুষ ছুটে আসেন পুরীতে। থাকা-খাওয়া-ঘোরার পর্যাপ্ত আয়োজন রয়েছে পুরীতে। পুরীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন আদি শঙ্করাচার্য। মন্দিরে শ্রীজগন্নাথ ছাড়া পাশাপাশি রয়েছেন বলরাম ও সুভদ্রা। পুরীর প্রাণকেন্দ্র স্বর্গদ্বার।

পুরী থেকে রঘুরাজপুর
পুরী থেকে অটো নিয়ে চলে যেতে পারেন পটের গ্রাম রঘুরাজপুর। সেখানে ঘরে ঘরে বর্ণময় পটের কাজ করছেন পটুয়ারা। এখানকার পটের খ্যাতি বিদেশেও পৌঁছেছে। শিল্পীর কাছ থেকে পট কিনতেও পারেন।

কীভাবে যাবেন : হাওড়া থেকে পুরী যায় ১২৮২১ ধৌলি এক্সপ্রেস (ছাড়ে সকাল ৬টায়, পৌঁছায় দুপুর আড়াইটায়), ১২৮৩৭ পুরী এক্সপ্রেস (ছাড়ে রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে, পৌঁছায় পরদিন সকাল সাড়ে ৭টায়), ১২২৭৭ দুরন্ত এক্সপ্রেস (ছাড়ে দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে, পৌঁছায় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে), ১৮৪০৯ জগন্নাথ এক্সপ্রেস (ছাড়ে সন্ধে ৭টায়, পৌঁছায় পরদিন ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে), ১২৮৮১ গরিব রথ এক্সপ্রেস (মঙ্গল, বৃহস্পতি) ছাড়ে রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে, পৌঁছায় পরদিন ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে), ১২৮৯৫/১২৮৮৭ পুরী এক্সপ্রেস ৯ (শুক্র/সোম) (ছাড়ে রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে, পৌঁছায় পরদিন ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে)।
কোথায় থাকবেন : উড়িষ্যা পর্যটনের পাš’নিবাস (০৬৭৫২-২২২৫৬২/২২২৭৪০), ভাড়া এসি স্যুইট ৩,০০০ টাকা, এসি ডিলাক্স ১,৮০০ টাকা, সাধারণ দ্বিশয্যা ৬৫০ টাকা, সাধারণ চার শয্যা ১,২০০ টাকা।
প্রাইভেট হোটেল : হোটেল ড্রিমজ গোল্ডেন লেগুন  (কলকাতা বুকিং : ৬৪১৫-২৪৯৬), ভাড়া ৭৫০-৯৫০ টাকা। হোটেল ডলফিন (কলকাতা বুকিং : ৯৩৩৯৪-৭৮৪১২), ভাড়া ৬০০-১,৫০০ টাকা। হোটেল নীলাদ্রি (কলকাতা বুকিং : ৬৫৪৮-২৮০৪), ভাড়া ২,০০০-২,৫০০ টাকা। কমলা রেসিডেন্সি (কলকাতা বুকিং : ৯৮৩০১-৩৩৫১১), ভাড়া ৬০০-১,৫০০ টাকা। হোটেল রাজ (কলকাতা বুকিং : ২২১২-৭৭১৫), ভাড়া ৯০০-১,২০০ টাকা।  হোটেল গোল্ডেন স্যান্ড (কলকাতা বুকিং : ৯৮৩১৩-৫৯৪০৮), ভাড়া ১,৩০০-১,৭৫০ টাকা। হোটেল দীপ রিসর্ট  (কলকাতা বুকিং : ২৪৮৬-৬০৫১), ভাড়া ৭৫০-২,০০০ টাকা। হোটেল পুলিনপুরী (কলকাতা বুকিং : ২৪৫৪-৯৪১০), ভাড়া ১,০০০-১,২০০ টাকা। রেবা বিচ রিসর্ট (কলকাতা বুকিং : ২২২৭-১৮৫০), ভাড়া ৮৫০-১,৫০০ টাকা। আনন্দ ভবন (কলকাতা বুকিং : ২২৩১-৮০১৯), ভাড়া ৪৫০-৮০০ টাকা।  হোটেল এশিয়ান ইন (কলকাতা বুকিং ২২১২-৭৩০১), ভাড়া ৮০০-১,০০০ টাকা। হোটেল ভূ-দেবী (কলকাতা বুকিং : ৯৫৪৭৩-০৮৪৪৬), ভাড়া ৪০০-১,২০০ টাকা। হোটেল হেভেন (কলকাতা বুকিং : ৯৮০৪২-৫৪০১৯), ভাড়া ৮০০-১,২০০ টাকা। হোটেল গ্র্যান্ড ডিলাক্স (কলকাতা বুকিং : ২২৬২-২৮২০), ভাড়া ৮০০-১,৪০০ টাকা। হোটেল ডায়মন্ড প্যালেস (কলকাতা বুকিং : ২২৬২-১৮৪৯), ভাড়া ৯০০-২,২০০ টাকা। হোটেল অবিনাশধাম (কলকাতা বুকিং : ৯৮০৪৯-৭৯৪১৪), ভাড়া ৫৫০-৯৯০ টাকা। এছাড়া পুরীতে অসংখ্য হোটেল এবং হলিডে হোম রয়েছে। তবু পুজোর ছুটিতে পুরী যেতে হলে হোটেল বুকিং করেই যাওয়া উচিত। পুরীর এস টি ডি কোড : ০৬৭৫২।
সরেজমিন বার্তা/এস

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন