শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০১৪

পুরী ভ্রমণ

Thursday, October 31, 2013

প্রথমেই বলে রাখি আমার ব্লগের এই পোস্টটা বাকিগুলোর থেকে কিছুটা আলাদা হবে, কারণ যেদিন থেকে আমি এই ভ্রমণসর্বস্ব ব্লগ লেখা শুরু করেছিলাম, সেদিনই ঠিক করেছিলাম বাঙালির তিনটে ঘোরার জায়গা দী-পু-দা (অর্থাৎ দীঘা-পুরী-দার্জিলিঙ) সম্পর্কে কখনও লিখব না । কারণ এইসব জায়গা সম্পর্কে বাঙালিদের নতুন করে কিছু জানার নেই । তাই আমাদের এই 'পুরী ভ্রমণ' সম্পর্কে অল্প কিছু কথা লিখে রাখছি এই কারণে যে হয়তো এই তথ্যগুলো অন্য কারুর বা পরবর্তীকালে আমাদের নিজেদেরই কাজে লাগতে পারে ।

যাওয়া : ২৬শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৫ - পুরী এক্সপ্রেস ।
ফেরা : ৩০শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১৫ - পুরী হাওড়া গরীবরথ এক্সপ্রেস ।

সারসংক্ষেপঃ

১. পুরীতে আমরা ছিলাম ইন্ডিয়ান ওভারসিস্‌ ব্যাঙ্কের হলিডে হোমে । পুরীতে গিয়ে হলিডে হোমে থাকা এখনও পর্যন্ত বেশ কমন্‌ ব্যাপার । কিন্তু যদি নিজেরা রান্না করার পরিকল্পনা না থাকে, তাহলে হলিডে হোমে না থাকাই ভালো । কারণ পুরীতে অনেক হোটেল পাওয়া যায় যেখানে থাকার খরচ হলিডে হোমের খরচের সমান ।
২. হলিডে হোমের দ্বিতীয় অসুবিধে হল বেশিরভাগ হলিডে হোমের সঙ্গে কোনও একটা ট্রাভেল এজেন্সির যোগাযোগ আছে । ঘোরার জন্য সেই এজেন্সির থেকে গাড়ি বা বাস না নিলে এরা ঝামেলা করে । আমরা এই পদ্ধতির কথা জানতাম না, তাই 'নন্দী ঘোষ ট্রাভেল্‌স্‌' - এর লোকজন রীতিমতো আমাদের ঘরে ঢুকে আমাদের হুমকি দিয়ে যায় ।
৩. পুরীর লোক্যাল সাইট সিয়িং এর জন্য বিভিন্ন ধরনের গাড়ি পাওয়া যায়, যার মধ্যে টাটা ম্যাজিক খুব বেশি চলে । আমাদের দলে ন'জন ছিলাম এবং একটা ম্যাজিকের ভাড়া নিল ৪২৫/- ।
৪. কোণার্ক আর ভুবনেশ্বরের ঘোরাঘুরির জন্য গাড়িভাড়া করে ঘোরাই ভাল, কারণ ভিডিও কোচের বাসে ঘোরা কিছুটা কষ্টসাধ্য । সেইসঙ্গে নিজের ভাড়া করা গাড়িতে ঘোরার আরেকটা সুবিধে হল কোনও জায়গায় নিজের মতো যতক্ষণ ইচ্ছে দাঁড়ানো যায় ।

উপসংহারঃ

আমাদের চারপাশে এমন কোনও বাঙালি পরিবার বোধহয় নেই যারা জীবনে কখনও পুরী যায়নি । তাই
পুরী !
পুরী সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া ভীষণ সহজ ব্যাপার । আরেকটা মজার ব্যাপার "পুরী ঘুরে খুব ভালো লাগল" এটা আমি কখনও কারুর মুখে যেমন শুনিনি, তেমনই "দূর দূর, পুরী আবার একটা যাওয়ার মতো জায়গা হল ?" এরকম বলতেও কাউকে শোনা যায় না । কম পুঁজি আর খুব এফর্টলেস্‌লি ঘোরার জন্য পুরী একটা আদর্শ জায়গা । এখানে ঠকে যাওয়া খুব সহজ নয়, কারণ পুরী সম্পর্কে এখানকার লোকেরা যা জানে, বাঙালি ট্যুরিস্টরাও প্রায় তাইই জানে । পুরীর লোকেদের আর কোনও রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা নেই, পুরী চলে প্রধানতঃ কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের টাকায় - আমরা হচ্ছি ওদের সবচেয়ে বড় কাস্টমার ! কাজেই "কাস্টমার ইজ গড" - এই কথাটা পুরীতে গিয়ে সবসময়ে মাথায় রাখা উচিৎ । আমরা জগন্নাথদেবের দর্শন করার জন্য পুরী যাই বটে, কিন্তু পুরীর মানুষের কাছে আসলে আমরাই 'জগন্নাথ' !
LINK 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন