ফেব্রুয়ারী 8th, 2011
ডিসেম্বারের ১৭ তারিখ সকালে সিঙ্গাপুর
থেকে রওনা হয়ে সন্ধ্যার দিকে এসে পৌছেছি কোয়ালালামপুর হোটেলে। অথচ দুপুরের
পরেই এখানে পৌছে যাওয়ার কথা ছিলো। দিনটিই মাটি হয়ে গেলো। হোটেল থেকে ফ্রেস
হয়ে সামান্য রেস্ট নিয়ে নেমে আসি হোটেলের রেস্টুরেন্টে, দুপুরের খাওয়া হয়নি
এখনো। খাওয়া দাওয়া সেরে বেড়হই হোটেলের আসে-পাশে পাঁয়ে হেঁটে দেখবো বলে।
এদিক সেদিক এলোমেলো হেঁটে বেড়াই। হঠাৎ করেই ভাতিজা সোহেল দেখতে পায় একটি
পার্টি সেন্টার কাম রেস্টুরেন্টে ইরানী হুক্কা সাজিয়ে রেখেছে, যেগুলিকে
ঢাকায় বলে শিশা। ঢাকার এ্যাটরিয়াম রেস্টুরেন্টে যখনই খেতে যাই তখনই দেখি এই
বস্তুটি। আমার কার্ড করা আছে, একটা নিলে একটা ফ্রী। কিন্তু কখনো টেস্ট করা
হয়নি। আমি সিগারেটই ফুকিনা তো হুক্কার দিকে নজর থাকে কি করে বলেন? ভাতিজা
আর ভাগিনার আগ্রহ উপেক্ষা করা গেলো না। মিথ্যে বলবো না, দুই টান দিয়ে
দেখেছি কোনো টেস্টই নেই, শুধু চমৎকার একটি ফ্লেবার। আমি আর সাইফুল ছাড়া
বাকিরা খুব আয়েশ করে টানলো। চারপাশ চমৎকার এক মহোনীয় ঘ্রানের আবেসে
টইটুম্বোর হয়ে উঠলো। বাইরে তখন ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। অনেকটা সময় এখানে
বসে আড্ডা আর দেশে কল করে কথা বলার পালা শেষে এবার আবার হোটেলে ফেরার পালা।
যে পথ ধরে এসেছি সবাই আবার সেই পথেই ফিরতে লাগলো, আমি ছাড়া। এ্যায়পোর্টে
ভাঙ্গানো রিঙ্গিত সব শেষ, তাই একজনকে মানি এক্সচেঞ্জের কথা জিজ্ঞেস করে আমি
একা অন্য পথে হাঁটা ধরি। একটি মোর ঘুরতেই দেখি আমি একেবারে হোটেরের কাছে
এসে পরেছি, একটু দূরেই মানি এক্সচেঞ্জ। ডলার ভাঙ্গিয়ে উদ্ভট সব চাইনিজ
খাবারের খোলা দোকান দেখতে দেখতে হোটেরের সামনে এসে দাঁড়াই। তখনই দেখতে পাই
সামনের মোড় ঘুরে অন্যরাও আসছে।
হোটেরের রুমে বসে থাকতে ভালো লাগছেনা, রাত
হয়েছে বেশ তবুও আমি একাই বেরিয়ে আসি রাস্তায়। অনেক দোকান বন্ধ হয়ে গেছে
এরই মধ্যে, উদ্ভট চাইনিজ দোকানের খাবার এখনো খেয়ে চলেছে নানান কিসিমের
খদ্দের। ফুটপাতের উপরেই চেয়ারটেবিল পাতা। একা একা ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে হাঁটতে
হাঁটতে চলে যাই অনেকটা দূর। বুকিত বিতানের এই এলাকাটি বেশ জমজমাট থাকে সব
সময়ই। সাথে ক্যামেরা নেইনি এই বৃষ্টির কারণেই। তাই কোনো ছবিও তোলা হয়নি।
মূলতো আমি মেইন রোড ধরে হাঁটছি, কারণ সাথে রয়েছে প্রায় দুইলাক্ষ টাকার মত
ডলার, অবশ্য সবটাই আমার না। ফিরে আসার সময় ভাবলাম একটু ঘুর পথে হোটেলের
অন্য পাশ দিয়ে ফেরা যায় কিনা দেখি। পাশের অপেক্ষাকৃত কম ব্যাস্ত একটি
রাস্তাতে কিছুটা হেঁটে যেতেই ভিন্ন কিছু প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে দ্রুত ফিরে
আসি মেইন রোডে। সিঙ্গাপুরের মত টুরিস্ট প্রধান শহরে এই বিরম্বনার সম্মুখিন
হতে হয়নি। হোটেলে যখন ফিরেছি তখন আমার সারাশরীরই ভিজে গেছে বৃষ্টির পরশে।
এখন ঘুম দিবো কালকের দিনের জন্য নিজেকে যেন প্রস্তুত রাখতে পারি।
ডিসেম্বারের ১৮ তারিখ সকালে বেশ বেলা করে উঠে নাস্তা সেরেআসি হোটেলের
বুফে রেস্টুরেন্ট থেকে। লাগেজ আগেই গুছিয়ে রেখেছি, হোটেল চেঞ্জ করার
উদ্দেশ্যে। ১২টার দিকে আসে আমাদের নিয়ে যেতে মাক্রবাস, রওনা হয়ে যাই অন্য
আরেক হোটেলের উদ্দেশ্যে। নতুন হোটেলে গিয়ে শুধু লাগেজ রুমে রেখেই নেমে আসি
নিচে। যাত্রা এবার “গেটিং হাইল্যান্ডের” উদ্দেশ্যে। হাইওয়েতে
উঠতেই চোখের নিমিশে গাড়ি ছুটতে শুরু করে ১২০কি.মি থেকে ১৪০কি.মি. তে, অথচ
মনে হচ্ছে যেন ছুটছি ৭০কি ৮০কি.মি. বেগে। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসি
পাহাড়ি এলাকাতে। রাস্তার দুপাশের সবুজ প্রকৃতি দেখতে দেখতে একসময় এসে যাই
গন্তব্যে। আমাদের আইডিয়াই ছিলোনা যায়গাটিতে এতো ঠান্ডা হবে। পাহারের উপরের
চমৎকার এই যায়গাটিতে মেঘেরা কুয়াশার মতো এসে ঝাপটে ধরছে কিছুক্ষণ পরপরই।
নিমিষেই হাড় কাপানো ঠান্ডাও তার ধাড়ালো দাঁত বসিয়ে যাচ্ছে আলতো করে। এখানে
নামতেই দেখি একজন সান্টা বুড়ো অনেকগুলি স্কুলছাত্রীদের নিয়ে বড়দিনের গান
গেয়ে নচছেন। এদিক সেদিক একটু ঘুরাঘুরি করে একসময় আমরা এসেপড়ি একটি
বাঁচ্চাদের প্লেগ্রাউন্ডে। হাজাররকমের গেইম আর রাইড এখানে সাজিয়ে রাখা
হয়েছে কিছুটা আলো আধাঁরির পরিবেশ তৈরি করে। এখান থেকে আরো কিছুটা সামনে
যেতেই পেয়ে যায় স্কাইওয়ে। টিকেট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে যাই। অল্প সময়েই চড়ে
বসি একটি বক্সে, চলতেও শুরু করে তখনই। বস এই অভিজ্ঞতা বলে বুঝানো যাবে না,
লিখেতো আরো অসম্ভব। পাহাড়ের এতটাই উপরে আমরা যেখানে মেঘগুলি কুয়াশার মতো
চাদর বিছিয়ে রেখেছে। ঘন সাদা মেঘেদের ভিতরে কিছুক্ষণ পরপরই ঢুকে যাচ্ছে,
একটু পরেই আবার বেরিয়ে আসছে। কখনো সোজা নিচের দিকে সাই করে নেমে যাচ্ছে,
কখনোবা ঢালু পথে নামছে। চলার গতিও প্রচন্ড, বিপরিত দিক থেকে আশা বক্সগুলি
সাইসাই করে পিছিয়ে যাচ্ছে। সাইফুল ২ সূরাকালাম পড়া শুরু করেদিয়েছে, মনির
ভাই নিঃশ্চুপ, ভাতিজা সোহেলও বেশ ঘাবড়ে গেছে। সামনেযে কত দূর পর্যন্ত
গিয়েছে তার শেষ দেখা যায় না, আর নিচের দিকে তাকালে অনেকটা নিচে পাহারের
কানাখন্দর ছাড়া আর কিছু নেই। না-না ভুল বললাম দেখার আছে পাহারের প্রতিটা
অংশই নাম না জানা সবুজ পাহাড়ি গাছগাছালিতে ভরা। আমি ক্যামেরায় টপাটপ ছবি
তুলে যাচ্ছি একের পর এক, অল্প একটু যায়গায় কোনো রকমে। এভাবে চলতে চলতে
প্রায় মিনিট ১২/১৫ পরে আমরা নেমে আসি নিচের ল্যান্ডিংএ। এতোটা পথ নেমে যাবো
আমাদের কল্পনাতেও ছিলো না। তাই ভাবলাম আবার টিকেট কেটে উপরে চলে যাবো,
কারণ আমাদের গাড়িতো দাঁড়িয়ে আছে উপরে। কিন্তু বিশাল লাইন দেখে আর টিকেট
কাটার সাহস হলো না। আমাদের ড্রাইভার মি. শাহরিনের নাম্বারে ফোন করে বললাম
আমরা নিচে নেমে গেছি, উনি জানালেন এখনি আসছেন আমাদের নিতে মাত্র ২০ মিনিট
লাগবে এখানে পৌছতে তার। ২০ মিনিট ড্রাইভ করে এখানে আসতে হবে!!! মনে কতটা পথ
আমরা নেমে এসেছি রোপওয়েতে চড়ে একবার ভাবুন!!
২০মিনিটের ব্রেক পেয়েছি, তাই এখানকার সপিং এরিয়াতে ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকি
সব কিছু। একটুতেই বুঝতে পারি বাইরের তুলনায় তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে সব
কিছু। এক যায়গায় দেখলাম চকলেট, আঁচার, শুকানো ফলের স্লাইস বিক্রি করছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে সব কিছুই খোলা, আপনি এক পিস করে টেস্ট করে পছন্দ হলে
ওরা প্যাকেট করে দিবে পরিমাণ মতো। সবাই খাচ্ছে তাই দেখে সাইফুলও খেয়ে
এসেছে। আমাদের সাইফুর ২ কিছু চকলেট কিনেছেও। সাইফুল আমাকে ডেকে নিয়ে গেছে
এই অভিনব দোকান দেখাতে। এবার আমিও এখান থেক সেখান থেকে এটা সেটা মুখে দিয়ে
দেখছি। আমার সামনের চাইনিজ লোকটা যে জিনিসটি নিয়ে মুখে দিয়েছে দেখতে তা
চমৎকার। একেবারে পাতলা আমসত্তের মত, সামান্য সাদা সাদা পাউডার দেয়া। ওর
দেখা দেখি আমিও একটা স্লাইস নিয়ে মুখে দিয়েছি, ভালো লাগলো না। ফেলার জন্য
কোনো বিন নেই। আরেক চিবুনি দিতেই টের পেলাম জিনিসটি কি!! কল্পনাও করতে
পারবেন না, সেটি ছিলো স্লাইস করা শুকনো মাছ, লবন দেয়া। ওয়াক!!! কিন্তু
ফেলার যায়গা নাই। বাধ্য হয়ে টুপকরে গিলে ফেলে তারাতারি আমের একটা টুকরো
মুখে পুরে বেরিয়ে আসি সেখান থেকে। সাইফুলের মুখে মিটি মিটি হাসি, ওও ধরা
খেয়ে এসেছে। তাই আমাকে খাওয়ানোর জন্য ডেকে এনেছে। আমাদের মধ্যে এই
ব্যাপারটি খুব চলে।
এবার ফেরার পালা, ফেরার পথে মি. শাহরিন আমাদের নামিয়ে দেয় টুইন
টাওয়াররের সামনে। কল করলে আবার আমাদের নিয়ে যাবে এসে। পৃথিবী বিখ্যাত এই
স্থাপনার সামনে বেশ কিছুটা সময় চলে ফটো সেশান আরো অনেক দর্শনার্থীদের সাথে।
এবার হোটেলে ফেরার পালা, মি. শাহরিন কে ফেরাপথে বলি আমরা আগামী কাল
এ্যায়পোর্ট যাওয়ার পথে পুত্রাজায়া হয়ে যেতে চাই। তিনি রাজি হন ৫০ রিঙ্গিতের
বিনিময়ে নিয়ে যেতে। কথা ঠিক হয়ে যায় এটাই আগামীকালের প্রগ্রাম থাকবে। এবার
হেটেলে ফেরার পথে মি. শাহরিন আমাদের শহরের বিভিন্ন যায়গা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে
একে-একে চিনিয়ে দেন জাতীয় মসজিদ, জাতীয় জাদুঘর, বার্ড ওয়ার্ল্ড, রেলওয়ে
স্টেশান ও মিউজিয়াম, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, পুরনো জাতীয় মসজিদ, রাস্ট্রোপতির
পুরনো বাসভবন ইত্যাদি। বিকেল গড়িয়ে যাওয়ায় কোনোটিই খোলা ছিলো না, আর
ক্যামেরার ব্যাটারি ডাউন হয়ে যাওয়ায় ছবি তোলা সম্ভব না হলেও সামনে দিয়ে
ঘুরে এসেছি এটাই বড় পাওনা, কারণ হাফডে সিটিটুরটি আমাদের মাঠে মারা গেছে
তাতো বুঝতেই পাচ্ছেন।
আপাততো ছবি দেখেন, বাকিটা কালকে…..
১। দিনের আলোতে কে.এল. টাওয়ার, হোটেলের কামরা থেকে তোলা।

২। দিনের আলোতে মিউজিয়ামটি, হোটেলের কামরা থেকে তোলা।

৩। হোটেল রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা।

৪। পাম গাছের তলায় আমি।

৫। পাম ফল

৬। বড়দিনের সাজে হোটেল চত্তর

৭। গ্রেটিং হাইল্যান্ড যাওয়ার পথে।

৮। গাড়িতে আমরা।

৯। গাড়ি থেকে গ্রেটিং হাইল্যান্ডের গেট।

১০। বড় দিনের গান ও নাচ

১১। একটি ধাঁধা, বলুনতো কে বেশি মোটা? আমার ভাতিজা না সান্টা?

১২। এতো হাসির কি?

১৩। এরা কিন্তু হাসায়

১৪। এই ঠান্ডার মধ্যে কে যায় পানির এই রাইডে চড়তে?

১৫। মনির ভাই, খেলেন নাই, শুধু ভাব ধরেছেন।

১৬। স্কাইওয়ে

১৭। স্কাইওয়ে

১৮। স্কাইওয়ের বক্সে, নিজের ছবি নিজে তুলেছি।

১৯। স্কাইওয়ে

২০। স্কাইওয়ে

২১। স্কাইওয়ে ল্যান্ডিং পয়েন্টে বড়দিন সাজ

২২। দুর থেকে টুইন টাওয়ার

২৩। দুর থেকে টুইন টাওয়ার

২৪। টুইন টাওয়ার এর গ্রাউন্ডে।

২৫। কাছ থেকে টুইন টাওয়ার।

২৬। কাছ থেকে টুইন টাওয়ার।

২৭। টুইন টাওয়ারের সামনে এই পানির ফোয়ারা।

২৮। টুইন টাওয়ারের সামনে আমি বা আমার পিছনে টুইন টাওয়ার।

২৯। সাইফুল ও টুইন টাওয়ার।

৩০। টুইন টাওয়ার।


ডিসেম্বারের ১৭ তারিখ সকাল ১০টা ৩০মিনিটেই আমাদের এ্যারপোর্টে নেয়ার
জন্য মাইক্রবাস এসে পরে। আগের দিনই বলে রাখা ছিলো “মিস্টার ইয়াং হো”কে,
ইনিই ছিলেন আমাদের সিঙ্গাপুর ভ্রমণে ব্যবহৃত মাক্রবাসের ড্রাইভার। আমাদের
সিংঙ্গাপুর টু মালায়শিয়া ফ্লইট টাইম দুপুর ১টা ২৫মিনিটে। সিঙ্গাপুরে আসার
সময় হোটেল রিজারভেশানের কাগজ না থাকায় বিশাল ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। তাই এবার
সমস্ত কাগজ-পত্র ভাতিজা সোহেলের কাছ থেকে আমার কাছে নিয়ে রেখেছি। কিন্তু
এবারও ভুল আমাদের পিছু ছাড়েনি, এবার দেখি মালয়শিয়ার হোটেলের রিজারভেশানের
কাজগই নেই। সকালের নাস্তার সময় বেশ কয়েকবার ঢাকায় ফোন করে আমাদের
ট্যুর-অপারেটারের কাছ থেকে হোটেলের নাম জেনে নিতে সক্ষম হই।
এবার আবার খেচর হওয়ার পালা, মাত্র এক ঘন্টার উড়ালেই চলে যাওয়া যায়
মালয়শিয়া। এয়ারপোর্টের সমস্ত ঝামেলা মিটিয়ে চড়ে বসি প্লেনে। ৩০/৩৫ মিনিট
যাওয়ার পরেই আকাশে দেখাদেয় কালো মেঘের ঘনঘটা। প্লেনের ছোট্ট জানালা দিয়ে
দেখি কাছেই একগুচ্ছ মেঘ থেকে বৃষ্টি ঝরছে। কিছুক্ষণ পরেই আবহাওয়া বেশ খারাপ
হয়ে যায়, কালো আর ঘন সাদা মেঘের ভিতর দিয়ে উড়ে চলেছি। প্রচন্ড ঝাকুনি আর
গোগো শব্দে অনেকেই ভয় পেয়ে যায়। মেঘ, মেঘের ভিতরে বৃষ্টি আর বৃষ্টিতে ভিজে
উড়েচলেছি একবার উচু আর একবার নিচু দিয়ে মেঘের বাইরে বেরোবার প্রচেষ্ঠায়।
জানালার কাচে বৃষ্টি ফোঁটা বিচিত্র সব নকশা কেটে দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে
পিছনে। একটু পরেই হঠাৎ করে দেখি প্লেনটি অনেক নিচে নেমে এসেছে, উপরের ঝনঝাট
এখানে অনেক কম। উপরের মেঘগুলি এখনো হালকা বৃষ্টি ঝরিয়ে যাচ্ছে। এরই মাঝে
নিচে দেখতে পাই আদিগন্ত পামগাছের বাগান, গাঢ় সবুজে একাকার। খুব দ্রুত
উচ্চতা হারাচ্ছি। দেখতে দেখতে পামবাগানের মাথা ছুই ছুই করে উড়েচলছি। আসলে
এ্যায়ারপোর্টে চলে এসেছি, এখনই ল্যান্ড করবে প্লেন, অথচ এতোক্ষণ বুঝতেই
পারিনি।
এখনো বৃষ্টি পরছে ভালই, বৃষ্টিস্নাতো রানওয়েতে চাকা ছোঁয়ায় প্লেন।
কিন্তু অবাক হয়ে যাই যখন দেখি এই বৃষ্টির মধ্যেই ছাতা নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে
নামতে হবে প্লন থেকে। বাইরে বৃষ্টি কম হলেও ভিশন বাতাস রয়েছে। ডিসেম্বরে
এমন বাতাস আর বৃষ্টি আমরা বাংলাদেশে কল্পনাও করতে পারি না, শীত নেই এক
বিন্দুও। ছাতা মাথায় বৃষ্টির ছটায় কোনরকমে কাকভেজা হয়ে এসে দাঁড়াই
ইমেগ্রেশানের সামনে। যাবতীয় ফর্মালিটি সেরে এসে দাঁড়াই এয়ারপোর্টের গেটে,
যেখানে আমাদের রিসিভ করতে আসবে হোটেল থেকে। কিন্তু না, এখানে কেউ নেই
আমাদের জন্য। আশেপাশে খুঁজেও কাউকে পাওয়া গেলো না। মোবাইলে অনেক চেষ্ঠা
করেও বাংলাদেশের ট্যুর-এজেন্টকে ধরতে পারলাম না। এভাবে বার বার চেষ্ঠা করে
আর আশেপাশে খুঁজতে খুঁজতে ঘন্টাদুয়েকের বেশি সময় পেরিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে
এ্যায়ারপোর্ট থেকে একটি মাইক্রবাস ভাড়া করি হোটেলে যাওয়ার জন্য ২০০
রিঙ্গিতে। হোটেলে গিয়ে কি দেখতে হবে আল্লাহ জানে, আমাদের হাতে রিজারভেশানের
কোনো প্রমাণও নেই।
অনেকটা পথ পারিদিয়ে একসময় এসে পৌছাই হোটেলে। রিসিপশান থেকে জানতে পারি
আমাদের জন্য রুম বুক করা আছে কিন্তু মাত্র এক রাতের জন্য। আমরা দুরাত এখানে
থাকবো বললে ওরা জানায় সেটা সম্ভব না, কারণ হোটেলের কোনো রুমই পরের দিন
খালি থাকবে না। কালকের কথা কলকে দেখা যাবে, আজতো আগে রুমে উঠি!! বিকেল
গড়িয়ে সন্ধা হচ্ছে দুপুরের খাওয়া হয়নি, আগে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া সারি-
তারপর দেখা যাবে কি হয় আগামী কাল।
আমরা ফ্রেশ হতে গেলাম আপনার ততোক্ষণ ঐদিনে তোলা কিছু ছবি দেখেন।
১। সিঙ্গাপুর এ্যারপোর্টে মনির ভাইয়ের সাথে

২। সিঙ্গাপুর এ্যারপোর্টে

৩। সিঙ্গাপুর এ্যারপোর্টে

৪। বড় দিনের জন্য এই সাজ।

৫। বড় দিনের জন্য এই সাজ।

৬। সিঙ্গাপুর এ্যারপোর্টে

৭। বড় দিনের জন্য এই সাজ।

৮। সাইফুল, দস্যু, সাইফুল ২ ও ভাতিজা সোহেল।

৯। পাখির চোখে দেখা….

১০। সাপের মত একেবেকে বয়েচলে নদী

১১ । আকাশ থেকে দেখা বৃষ্টি ঝরানো মেঘ

১২। হোটেলের রুম থেকে তুলা Kulal Lumpur টাওয়ার

১২। Kulal Lumpur টাওয়ার

১৩। Kulal Lumpur টাওয়ার

১৪। হোটেলের রুম থেকে তুলা Numismat জাদুঘর

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন