আমার husband তসলিম আহমেদ মুরাদ কে বাংলা-র ইবনে বতুতা বলা যায়!ঘোরাঘুরি তে
তার ক্লান্তি নেই। তাই তার কাছে বিয়ের পর আমি ৩ টি আবদার করেছিলাম।
১/ খুব সুন্দর একটা সমুদ্র দেখতে চাই
২/ বরফ/snowfall দেখতে চাই
৩/ মরুভূমি দেখতে চাই
আমার স্বামী ভেবে দেখল তার বউ মিসেস ইবনে বতুতা-ই হতে চায় যখন, তখন না করার কি দরকার!!
বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড এবং মালয়শিয়া-র বেশ কিছু সুন্দর সমুদ্রসৈকত থেকে আমাকে ঘুরিয়ে আনল সে।
সমুদ্র দেখে না হয় আমার মন ভরল।কিন্তু আমার বরফ দেখা-র কি হবে? তসলিম কে বলতেই সে বলে ফ্রিজ খুলে বরফ দেখ।কিন্তু আমি তো এত সহজ এ ছেড়ে দেয়ার পাত্রী না। আমরা যারা চাকরিজীবী ,তাদের লম্বা ছুটি বের করে ঘুরতে যাওয়াও একটা সমস্যা। বরফ/snowfall দেখতে চাইলে কাছে ধারে কুলু মানালি-ই সবাই যেতে চায়। আমরাও তাই চাচ্ছিলাম। কিন্তু ১০/১১ দিন এর নিচে কোন ভাবেই এই বরফ দেখার সফর শেষ করা যাবে না।উপরন্তু প্লেন এ করে হয়ত কিছু পথ যেয়ে সফরসুচি কিছুটা সংক্ষেপ করা যেত কিন্তু আমাদের যে সময় যাওয়ার প্ল্যান, সে সময় ওখানে নাকি ভয়ঙ্কর ঠাণ্ডা। কি আর করা! পরে গুগল এর সহায়তা নিলাম। আমাদের ধারে কাছে ভূটান নামক দেশ টায় নাকি মধ্য জানুয়ারী থেকে snowfall শুরু হয়। মার্চ পর্যন্ত চলে। জানুয়ারী তেই আমরা যেতে চাই।আমার তখন সেমিস্টার ব্রেক আছে। হুট করেই CTB tourism এর একটি package নিয়ে নিলাম।৪ দিন/৩ রাত।মাথাপিছু খরচ ৩৫ হাজার টাকা। প্লেন ভাড়া, হোটেল, ৩ বেলা খাওয়া এবং বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘোরা ফেরা এর অন্তর্গত। এবার শুরু হল যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ। যেহেতু snowfall এর chance আছে, তাপমাত্রা মাইনাস এর ঘরে, ভারি শীতের কাপড়, বুট জুতা, কান টুপি, হাত মোজা ইত্যাদি কেনা হল ঢাকা কলেজ এর উল্টো দিকের মার্কেট আর বঙ্গ থেকে। কেনার সময় দোকানদার মনে হয় ভেবেছিল ইউরোপ/ আমেরিকা তেই যাচ্ছি আমরা। ভূটান শুনে একটু অবাক এ হয়েছিল। কারন ভূটান এর তাপমাত্রা নিয়ে এদের কোন idea নাই। ফলে তারা আমাদের তাদের সুচিন্তিত মতামত না জানাতে পেরে হয়ত মনকষ্টেও ভুগছিলেন। যাই হোক,অবশেষে এল ১৮ জানুয়ারী। শুক্রবার সকাল ৯:২০ এ আমাদের flight। ঢাকা তেও তখন বেশ ঠাণ্ডা।কিন্তু ভূটান এর কাছে কিছুই না এটা ভেবে দেশ ছাড়ার আগেই আমরা আমাদের overcoat, বুট জুতা,হাত মোজা, কান টুপি সব পড়ে তৈরি হয়ে রওনা দিলাম। আমাদের নিতে airport এ প্রস্তুত Druk Air- Royal Bhutan Airlines. বলে রাখা ভাল যে আকাশ পথে ভূটান এ যেতে হলে এই বিমানেই যেতে হবে কারণ এই দেশের বিমানবন্দর টা নাকি এমন জায়গায় অবস্থিত যে তাদের নিজস্ব কয়েকজন দক্ষ পাইলট ছাড়া কেও বিমান take off/ land করাতে পারে না এখানে। যাই হোক,এক ঘণ্টার বিমান ভ্রমণ শেষে পৌঁছে গেলাম পারো তে।ভূটান এর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখানেই অবস্থিত।
Airport এ পৌঁছেই এক কাহিনী ঘটলো। ভূটান এ ধূমপান একদম নিষেধ। মদ্যপান না! নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন তসলিমকে জিজ্ঞেস করলো ওর কাছে তামাক জাতীয় কিছু আছে কিনা। ও হ্যাঁ বলতেই ট্যাক্সস্বরূপ ৩০০ গুল্ট্রাম (ভূটান এর মুদ্রা) গচ্চা দিতে হল। পুরো ভূটান সফরে এই জিনিস টা আমার স্বামীকে দারুন পীড়া দিয়েছিল। ওর মানতে খুব কষ্ট হচ্ছিল মদ্যপান এ নিষেধাজ্ঞা না রেখে ধূমপান এ কেন রাখা হল! আমি কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞায় খুশিই হয়েছিলাম।
যাই হোক, পারো ছোট ছিমছাম একটা জায়গা।জানুয়ারী মাস বলেই হয়ত তীব্র শীত ,গাছে তেমন কোন পাতা নেই। কেমন যেন ন্যাড়া একটা ভাব প্রকৃতিতে। আকাশে সূর্য থাকলেও তার তেজ খুব কম।অনেক ঠাণ্ডা।
১/ খুব সুন্দর একটা সমুদ্র দেখতে চাই
২/ বরফ/snowfall দেখতে চাই
৩/ মরুভূমি দেখতে চাই
আমার স্বামী ভেবে দেখল তার বউ মিসেস ইবনে বতুতা-ই হতে চায় যখন, তখন না করার কি দরকার!!
বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড এবং মালয়শিয়া-র বেশ কিছু সুন্দর সমুদ্রসৈকত থেকে আমাকে ঘুরিয়ে আনল সে।
সমুদ্র দেখে না হয় আমার মন ভরল।কিন্তু আমার বরফ দেখা-র কি হবে? তসলিম কে বলতেই সে বলে ফ্রিজ খুলে বরফ দেখ।কিন্তু আমি তো এত সহজ এ ছেড়ে দেয়ার পাত্রী না। আমরা যারা চাকরিজীবী ,তাদের লম্বা ছুটি বের করে ঘুরতে যাওয়াও একটা সমস্যা। বরফ/snowfall দেখতে চাইলে কাছে ধারে কুলু মানালি-ই সবাই যেতে চায়। আমরাও তাই চাচ্ছিলাম। কিন্তু ১০/১১ দিন এর নিচে কোন ভাবেই এই বরফ দেখার সফর শেষ করা যাবে না।উপরন্তু প্লেন এ করে হয়ত কিছু পথ যেয়ে সফরসুচি কিছুটা সংক্ষেপ করা যেত কিন্তু আমাদের যে সময় যাওয়ার প্ল্যান, সে সময় ওখানে নাকি ভয়ঙ্কর ঠাণ্ডা। কি আর করা! পরে গুগল এর সহায়তা নিলাম। আমাদের ধারে কাছে ভূটান নামক দেশ টায় নাকি মধ্য জানুয়ারী থেকে snowfall শুরু হয়। মার্চ পর্যন্ত চলে। জানুয়ারী তেই আমরা যেতে চাই।আমার তখন সেমিস্টার ব্রেক আছে। হুট করেই CTB tourism এর একটি package নিয়ে নিলাম।৪ দিন/৩ রাত।মাথাপিছু খরচ ৩৫ হাজার টাকা। প্লেন ভাড়া, হোটেল, ৩ বেলা খাওয়া এবং বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘোরা ফেরা এর অন্তর্গত। এবার শুরু হল যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ। যেহেতু snowfall এর chance আছে, তাপমাত্রা মাইনাস এর ঘরে, ভারি শীতের কাপড়, বুট জুতা, কান টুপি, হাত মোজা ইত্যাদি কেনা হল ঢাকা কলেজ এর উল্টো দিকের মার্কেট আর বঙ্গ থেকে। কেনার সময় দোকানদার মনে হয় ভেবেছিল ইউরোপ/ আমেরিকা তেই যাচ্ছি আমরা। ভূটান শুনে একটু অবাক এ হয়েছিল। কারন ভূটান এর তাপমাত্রা নিয়ে এদের কোন idea নাই। ফলে তারা আমাদের তাদের সুচিন্তিত মতামত না জানাতে পেরে হয়ত মনকষ্টেও ভুগছিলেন। যাই হোক,অবশেষে এল ১৮ জানুয়ারী। শুক্রবার সকাল ৯:২০ এ আমাদের flight। ঢাকা তেও তখন বেশ ঠাণ্ডা।কিন্তু ভূটান এর কাছে কিছুই না এটা ভেবে দেশ ছাড়ার আগেই আমরা আমাদের overcoat, বুট জুতা,হাত মোজা, কান টুপি সব পড়ে তৈরি হয়ে রওনা দিলাম। আমাদের নিতে airport এ প্রস্তুত Druk Air- Royal Bhutan Airlines. বলে রাখা ভাল যে আকাশ পথে ভূটান এ যেতে হলে এই বিমানেই যেতে হবে কারণ এই দেশের বিমানবন্দর টা নাকি এমন জায়গায় অবস্থিত যে তাদের নিজস্ব কয়েকজন দক্ষ পাইলট ছাড়া কেও বিমান take off/ land করাতে পারে না এখানে। যাই হোক,এক ঘণ্টার বিমান ভ্রমণ শেষে পৌঁছে গেলাম পারো তে।ভূটান এর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখানেই অবস্থিত।
Airport এ পৌঁছেই এক কাহিনী ঘটলো। ভূটান এ ধূমপান একদম নিষেধ। মদ্যপান না! নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন তসলিমকে জিজ্ঞেস করলো ওর কাছে তামাক জাতীয় কিছু আছে কিনা। ও হ্যাঁ বলতেই ট্যাক্সস্বরূপ ৩০০ গুল্ট্রাম (ভূটান এর মুদ্রা) গচ্চা দিতে হল। পুরো ভূটান সফরে এই জিনিস টা আমার স্বামীকে দারুন পীড়া দিয়েছিল। ওর মানতে খুব কষ্ট হচ্ছিল মদ্যপান এ নিষেধাজ্ঞা না রেখে ধূমপান এ কেন রাখা হল! আমি কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞায় খুশিই হয়েছিলাম।
যাই হোক, পারো ছোট ছিমছাম একটা জায়গা।জানুয়ারী মাস বলেই হয়ত তীব্র শীত ,গাছে তেমন কোন পাতা নেই। কেমন যেন ন্যাড়া একটা ভাব প্রকৃতিতে। আকাশে সূর্য থাকলেও তার তেজ খুব কম।অনেক ঠাণ্ডা।

আমাদের নিতে যে ড্রাইভার এসেছে,তার নাম সোনাম।বেশ ভাল ইংলিশ বলে। তার
কাছ থেকেই শুনলাম এবার নাকি snowfall শুরু হয় নাই। তার মতে, global warming
এই late snowfall এর জন্য দায়ী। শুনে মনটা এতই খারাপ হল যে ইচ্ছা হল
থিম্পু না যেয়ে দেশ এ ফেরত যাই। কিন্তু চাইলেই হবে না।৩ দিন পর আমাদের
ফিরতি flight। আমাদের ভ্রমণ সূচি ছিল প্রথম দিন পারো থেকে থিম্পু আসা, ২য়
দিন সারাদিন থিম্পু থাকা,৩য় দিন থিম্পু থেকে পারো এসে রাতে থাকা এবং ৪র্থ
দিন পারো থেকেই বাংলাদেশে রওনা দেয়া। পারো থেকে থিম্পু আসার পথ এ ভ্রমণ এর
অংশ হিসেবে আমাদের একটা museum এ নেয়া হল। কোন এক ভুমিকম্পে main museum
building টা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাশে আর একটা ভবন এ museum স্থানান্তর করা
হয়েছে। museum দেখতে আমি ভূটান আসি নাই। তাই তাড়াহুড়া করে দেখলাম, না দেখলে
ড্রাইভার কি না কি ভাবে তাই। পারো থেকে থিম্পু আসার পথ টা পাহাড়ি। আগে
শুনেছিলাম রাস্তা টা নাকি স্বর্গের রাস্তা। মন্ত্রমুগ্ধের মত প্রকৃতি দেখতে
দেখতেই মানুষ থিম্পু এসে পৌছায়। কিন্তু আমরা snowfall দেখব বলে এমন সময়
বেছে নিয়েছি যখন প্রকৃতি পুরো পাতা শুন্য। কোন গাছে পাতা নাই।ফুল নাই। ফল
নাই। কিছুই ভাল লাগলো না পুরো পথ এ। হয়ত এবার snowfall শুরু হয় নাই শুনে মন
এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে কিছুই ভাল লাগছিল না। হাতে সময় ৩ দিন। এর মাঝে
snowfall না হলে পুরো trip টাই মাটি। কি আর করা! থিম্পু এসে হোটেল এ
উঠলাম। হোটেল এর ম্যানেজার শিলিগুরি-র। ভাল বাংলা পারেন। উনিও বললেন এটা
tourist season না, August/September এ আসলে নাকি প্রকৃতি দেখতে খুব ভাল
লাগত। বললাম তাকে আমরা snowfall দেখতে এসেছি। শুনে উনিও দুঃখ প্রকাশ করলেন।
এবার snowfall এখনও শুরু হয় নাই তাই। মন টা ভীষণ খারাপ। দুপুর এ খেলাম
হোটেলেই।খারাপ না। চিকেন বিরিয়ানি , নান, চিকেন টিক্কা, মটর পনির সহ
বিভিন্ন ভারতীয় খাবার। দুপুরে খেয়ে বের হলাম থিম্পু দেখতে। আমাদের ভ্রমণ
সূচি তে প্রথম দিন সব ধর্মীয় উপাসনালয় ভ্রমণ এর কথা। একটা দেখতে গেলাম।
ধার্মিক মানুষ এর আনা গোনা অনেক ওখানে। ভাল করে ঘুরে দেখলাম।

২য় টায় নিতে চাইল ড্রাইভার। আমরা মাফ চাইলাম। আর না ভাই। আমাদের মন
খারাপ। এই সব দেখতে এত কষ্ট করে আসি নাই আমরা। যা দেখতে আসছি,সেই snowfall
এর নাকি দেখা নাই। চোখে প্রায় পানি চলে আসছে দুঃখে। আর কিছু দেখার নাই তাই
সন্ধ্যার আগেই ড্রাইভার কে বিদায় দিলাম আমরা। এত ঠাণ্ডা ভূটান এ যে রাতে
রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে যায়। ভাল কোন coffee shop/restaurant ও নাই এই
শহরে। মন খারাপ করে হোটেল এ ফিরে গেলাম। রাতে হোটেলেই খেলাম। চাপাতি, চিকেন
কারি, আলুর দম ইত্যাদি। খুবই দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ঘুমাতে গেলাম
দুজন।পরদিন বেশ সকালে ঘুম থেকে উঠলাম। ৭ টার দিকে। উঠে দেখি বাইরে বৃষ্টি।
কি যে ঠাণ্ডা! নাস্তা খেতে হোটেল এর restaurant এ নামলাম। আমাদের দেখেই
ম্যানেজার হাসিমুখে বলল আপনারা অনেক lucky! দেখেন বাইরে snowfall হচ্ছে!
বলে কি ম্যানেজার? আমি না দেখলাম বৃষ্টি! এই বৃষ্টির মত দেখতে জিনিস টা
আসলে snowfall এর শুরুর রূপ। ধীরে ধীরে এই বৃষ্টিরুপি snowfall নাকি ভারি
হতে থাকে । খুশি তে নাস্তা করব কি? এখনই রাস্তায় বের হতে চাইলাম। ড্রাইভার
কে ফোন দিলাম যেন জলদি আসে। ড্রাইভার আসতে দেরি করছে দেখে নিজেরাই নেমে
গেলাম রাস্তায়। বৃষ্টি-র মত হলেও হাল্কা ভারি এই snowfall । বরফ হাল্কা
জমলে যেমন হয় তেমন। এর ই মাঝে ড্রাইভার চলে এল।আমাদের নিয়ে রওনা দিল দোচালা
পাস নামক এক জায়গায়। সেখানে নাকি দারুন snowfall হয়। কথা একদম সত্য। আমরা
যেতে যেতে ধুমসে snowfall শুরু হয়ে গেল।সে এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য। কোন
বর্ণনায় সেটা ফুটিয়ে তোলা যাবে না। দোচালা পাস এর তাপমাত্রা ছিল -৭ ডিগ্রী
সেলসিয়াস। তুষার ঝড় শুরু হওয়ার আশংকায় আমাদের বেশি দূরে নিল না আর
ড্রাইভার।

ধীরে ধীরে সাদা একটা চাদরে ছেয়ে গেল চারপাশ। যত দূর চোখ যায়, সব
সাদা।অদ্ভুত সুন্দর। জীবন এর প্রথম snowfall। খুশিতে পাগল হওয়ার যোগাড়
আমার। গাড়ি থামিয়ে নামলাম এক জায়গায় ছবি তুলতে।

এত্ত ঠাণ্ডা। জমে যাওয়ার মত অবস্থা। তাও ছবি তুললাম বেশ কিছু। এতই
ঠাণ্ডা যে হাতমোজা খুলে ক্যামেরা হাতে ছবি তোলাই দায়। মনে মনে ভাবলাম এত
ঠাণ্ডায় বরফ এর উপর নায়ক নায়িকারা কিভাবে পাতলা কাপড় পড়ে নাচ গান করে?
আমরা ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছিলাম কিন্তু দেখলাম আমাদের ড্রাইভার এবং ভূটান এর পথচারীরা বেশ স্বাভাবিক। এত ঠাণ্ডায় ও তারা বেশ স্বাভাবিক। মজার বাপার লক্ষ্য করলাম ওদের দেশের কুকুরগুলো-র পশম বেশ বড় বড়। প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়াতেই আল্লাহ এমন ভাবে সৃষ্টি করেছেন এগুলোকে।
আমরা ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছিলাম কিন্তু দেখলাম আমাদের ড্রাইভার এবং ভূটান এর পথচারীরা বেশ স্বাভাবিক। এত ঠাণ্ডায় ও তারা বেশ স্বাভাবিক। মজার বাপার লক্ষ্য করলাম ওদের দেশের কুকুরগুলো-র পশম বেশ বড় বড়। প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়াতেই আল্লাহ এমন ভাবে সৃষ্টি করেছেন এগুলোকে।

ভূটান এর প্রথা অনুযায়ী বছরের প্রথম snowfall এর দিন সরকারী ছুটি।
রাস্তায় নেমে এল সেদিন শত শত মানুষ। snowfall উপভোগ করতে। কেউ কেউ snow
দিয়ে তৈরি করছিল তাদের মন মত জিনিস। কেউ কেউ snow ছুড়ে ছুড়ে মজা করছিল।
দেখার মত ছিল সবার খুশি সেদিন। মন টা ভরে গিয়েছিল। আমাদের ভূটান আসা সার্থক
অবশেষে। এই snowfall এর মাঝে আমরা ঘুরে আসলাম একটা মিনি zoo থেকে। দেখে
আসলাম তাদের জাতীয় পশু টাকিন। দুপুর পর্যন্ত চলল snowfall । এর পর হাল্কা
রোদ উঁকি দিল। আমরা হোটেল এ ফিরে খেয়ে নিলাম।
বিকালে দেখতে গেলাম বুদ্ধা পয়েন্ট। বিশালাকার এক বুদ্ধের মূর্তি আছে সেখানে। পুরো থিম্পু শহর থেকেই এটা দেখা যায় বলতে গেলে। এই বুদ্ধা পয়েন্ট শহর এর সবচেয়ে উচুতে অবস্থিত। ওখান থেকে পুরো শহরটাকে দেখা যায়। ওখানে আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলাম। ওই পয়েন্ট থেকে রাতের থিম্পু শহরকে বেশ লাগছিল।
বিকালে দেখতে গেলাম বুদ্ধা পয়েন্ট। বিশালাকার এক বুদ্ধের মূর্তি আছে সেখানে। পুরো থিম্পু শহর থেকেই এটা দেখা যায় বলতে গেলে। এই বুদ্ধা পয়েন্ট শহর এর সবচেয়ে উচুতে অবস্থিত। ওখান থেকে পুরো শহরটাকে দেখা যায়। ওখানে আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলাম। ওই পয়েন্ট থেকে রাতের থিম্পু শহরকে বেশ লাগছিল।

খুব ভাল কাটালাম ২য় দিন টা। রাতে একটা মোটামুটি মানের coffee shop এর
খোজ পেলাম। ওখানে coffee খেতে যেয়ে ফ্রী wifi connection পেলাম। এই যুগ এ
ইন্টারনেট ছাড়া একদিন চিন্তা করাও কষ্টকর। সেখানে আমরা প্রায় দেড় দিন পর
ইন্টারনেট এর দেখা পেলাম। রাত টাও ভাল গেল।

পরদিন সকালে নাস্তা করে পারো রওনা দিলাম।মনে মনে দোয়া করছিলাম আজ ও যেন
snowfall হয়। কিন্তু একদিন ই বিধাতা মুখ তুলে চেয়েছিলেন। অবশ্য তাতেই আমরা
খুশি। পারো এসে পোঁছালাম ১১ টার দিকে। হোটেল এর আশ পাশ টা ঘুরে দেখলাম।
পাহাড়ের চূড়ায় জমা বরফ দেখতে বেশ ভাল লাগল।

পারো তে টুকটাক জিনিস কিনব ভাবলাম। অত্যধিক দাম। মজার ব্যাপার এই দেশে
ইন্ডিয়ান রুপী অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। ইন্ডিয়ান জিনিস ই সব দোকান গুলো
তে। দুপুর এ খেয়ে গেলাম Tiger's Nest Monastery দেখতে। অনেক আগে নাকি ওদের
কোন এক দেবতা পাহাড়ের চুড়ায় এই মন্দির টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অনেক ধর্ম
অনুরাগী মানুষ এখানে আসেন এবং বেশ বিপদজনক এই পথ বেয়ে পাহাড়ের ওপর ওই
মন্দির দর্শনে যান। আমরা নিচ থেকে দেখেই ফেরত এলাম। আগের দিন যে snowfall
হয়েছিল তার কিছু নিদর্শন দেখা যাচ্ছিল মাঝে মাঝে। ভেজা তুলার মত পরে আছে
জায়গায় জায়গায় snow । আগের দিন যে snow কে অদ্ভুত সুন্দর লেগেছিল, আজ তাকে
ভেজা তু্লার মত পরে থাকতে দেখে একটুও ভাল লাগলো না। পারো তে বেশ কিছু
শুকিয়ে যাওয়া নদীর দেখা পেলাম। পানি খুব ই কম। দেখলে ঝিরি পথ মনে হয়। পাথর
ঘেরা নদী। খারাপ লাগল না। ভালই।
সন্ধ্যার দিকে ফিরে এলাম হোটেলে। আশেপাশে কোন ভাল restaurant নাই। wifi
connection নাই। কিচ্ছু করার নাই তাই রুম এ বসে টেলিভিশন দেখলাম। রাতে
হোটেল এ খেয়ে ঘুম দিলাম। পরদিন আমাদের ফিরতে হবে দেশে। সকালে উঠে দেখি পানি
নাই ওয়াশ্ রুমে। ডাকলাম হোটেল এর লোক দের। শুনলাম ট্যাংক এর পানি জমে বরফ
হয়ে গেছে ঠাণ্ডায়। পরে হোটেলের লোকেরা বালতি করে পানি দিয়ে গেল। আমরা
নাস্তা করে airport গেলাম। ড্রাইভার বেশ ভাল গাইড হিসেবে কাজ করেছে এই
কয়দিন। এই ড্রাইভারই আমাদের airport থেকে receive করে এই কইদিন বিভিন্ন
জায়গায় ঘুরিয়ে আবার airport এ drop করে দিল আমাদের। বেশ ভাল মানুষ। এই
প্রথম একটা দেশ ছাড়ার সময় একটু ও কষ্ট হয় নাই আমাদের। কবে নিজ দেশে ফিরব
অস্থির হয়ে ছিলাম। ড্রাইভার আমাদের দাওয়াত দিয়েছে আবার ভূটান এ যাওয়ার।
August/September এর দিকে যেতে বলেছিল। আমরা তাকে কষ্ট দিতে চাই নাই। তাই
বলে এসেছি আবার আসবো। কিন্তু সত্যি বলতে মাফ চাই। ভূটান এ যাওয়ার কোন শখ
নাই আর আমাদের। snowfall না দেখতে পারলে tour টা কি যে হত! আসার পথে প্লেন
এও এক কাহিনী ঘটেছে। এই প্রথম কোন international flight এ দেখলাম বরফ এর
মত ঠাণ্ডা খাবার পরিবেশন করতে। এক ঘণ্টার যাত্রাপথ এ না খেলে কোন সমস্যা
নাই। তাই আর ফিরতি পথ এ প্লেন এ ওই বরফ খাদ্য খাই নাই। নিজ দেশে ফিরে পেট
ভরে ভাত খেয়েছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন